জীবননগর পৌর কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক সুজন আলী (৩৫) হত্যার দায়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে সুজনের বড় ভাই বাদী হয়ে জীবননগর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে হত্যা মামলা করেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে গ্রেপ্তারদের আদালতে সোর্পদ করা হয়। বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন জীবননগর থানার ওসি মামুন হোসেন বিশ্বাস।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মেদিনীপুর গ্রামের মৃত আনার মোল্লার ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৫৫), শাখারিয়া গ্রামের মৃত ওয়াদ আলীর ছেলে মজিবর রহমান (৫০) ও মৃত আমিন উদ্দিনের ছেলে মহিউদ্দিন (৫০)।
পুলিশ জানায়, শিক্ষক সুজন আলী সমকামী ছিলেন। লুকিয়ে সম্পর্ক করতেন বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে। সম্প্রতি তিনি যৌন সম্পর্ক করেন আব্দুর রাজ্জাক, মজিবর রহমান ও মহিউদ্দিনের সঙ্গে। গত ৬ অক্টোবর ঘটনার দিন সুজন আলী উপজেলার শাখারিয়ার পিচমড়ে সিদ্দিকা নার্সারিতে ওই তিনজনকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর পালাক্রমে তিনজন তাকে বলাৎকার করেন। এ সময় সুজন তাদের বারবার ডাকা এবং একজনের গল্প আরেকজনকে বলা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। বলাৎকারের একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। একপর্যায়ে তাকে মাথায় নিড়ানি দিয়ে আঘাত করে তারা হত্যা করেন। পরে লাশ মেদিনীপুরের ঘাড়কাঠি বিলে কচুরিপানার নিচে চাপা দিয়ে গুম করেন।
একাধিক সূত্র জানায়, সুজন আলীর পরিবার থানায় জিডি করলেও কেউ পর্যাপ্ত তথ্য দেয়নি। তবে পুলিশ আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সুজনের চারিত্রিক বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। গত ২৬ অক্টোবর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের মেদিনীপুর ঘাড়কাঠি মাঠের বিল থেকে একটি লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। ওই কঙ্কালের হাতে লাগানো রড থেকে পরিবার শনাক্ত করে সুজনের মরদেহ। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। অপরদিকে মরদেহ উদ্ধারের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান আব্দুর রাজ্জাক।
জীবননগর থানার ওসি মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, গত ২৬ অক্টোবর ঘাড়কাঠি বিলের কচুরিপানার ভেতর থেকে একটি লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। কঙ্কালের হাতে লাগানো রড থেকে পরিবার শনাক্ত করে সেটি সুজনের লাশ। এদিকে লাশ উদ্ধারের পরপরই আব্দুর রাজ্জাক যশোরে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাকে যশোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মজিবর রহমান ও মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, আব্দুর রাজ্জাক হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন