টাঙ্গাইলে শীতকালীন সব চাষে ব্যস্ত কৃষক। চলতি বছরে অতি বৃষ্টি ও বন্যর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা পুষিয়ে নিতে আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন। এতে অল্প কিছুদিনের মধ্যে উৎপাদিত সবজি বাজারে চলে যাবে এবং শীতকালীন সবজি বিক্রি করে অধিক লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।
জানা যায়, সব ধরনের সবজি উৎপাদনের উর্বর জমি রয়েছে টাঙ্গাইল জেলায়। প্রতি বছর এ জেলার পাহাড়ি অঞ্চল, চরাঞ্চল ও সমতল ভূমিতে প্রচুর শীতকালীন সবজির উৎপাদন হয়ে থাকে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এ বছর জেলার ১১ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সবজির ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
চলতি বছর বন্যা ও অতি বৃষ্টির কারণে সবজি আবাদে বিঘ্ন ঘটে। নষ্ট হয়ে যায় বীজ ও চারা। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে বাজারগুলোতে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম বেড়ে যায়। বর্ষা মৌসুম কেটে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শুরু করেছেন শীতকালীন সবজি চাষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাষ করা সবজির মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, পাতাকপি, মুলা, টমেটো, শিম, লাউ, পালংশাক, লালশাকসহ হরেক রকমের সবজি। কৃষকদের মধ্যে কেউ জমি তৈরি করছেন, কেউ জমিতে বীজ বা চারা রোপণ করছেন। কেউ আবার জমিতে গজিয়ে ওঠা সবজির গাছের পরিচর্যা করছেন। সব মিলিয়ে কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের এই আগাম সবজি বাজারে উঠার পরই কমে যাবে সবজির দাম। একই সঙ্গে বাজারে সবজির সংকটও কেটে যাবে।
সদর উপজেলার কৃষক আবদুল মালেক বলেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে শীতকালীন সবজি আবাদ করে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এ কারণে আমি প্রতি বছরই সবজি চাষ করি। তাতে বাজারে চাহিদাও থাকে আবার লাভবান হওয়া যায়।
সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়া বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে আমাদের এলাকায় প্রতি বছরই বাড়ছে শীতকালীন সবজির জমির পরিমাণ। এছাড়াও এই অঞ্চলে এক সময় ধানের চাষ হতো। এখন নতুন নতুন বাড়ি হওয়াতে জমিগুলো সংকুচিত হয়ে পড়ে। সেই ধান চাষের পরিবর্তে এখন এ এলাকায় হচ্ছে সবজির আবাদ।
টাঙ্গাইলের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তা ফারজানা খান কালবেলাকে বলেন, এ জেলা সবধরনের সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর জেলায় বিপুল পরিমাণ সবজির চাষ হয়। তাতে জেলার চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি ঢাকার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। এদিকে সব ধরনের সবজির দামও ভালো পাওয়া যায়। সে জন্যই এ বছর কৃষকরা বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে শীতকালীন সবজি আবাদে।
টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. দুলাল উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও টাঙ্গাইলে সবজির বাম্পার ফলন হবে। এর ফলে বাজারে সবজির সংকট কেটে যাবে, একই সঙ্গে দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে চলে আসবে বলে মনে করছি।
মন্তব্য করুন