রংপুরে রেললাইনে বন্ধুদের নিয়ে সেলফি তোলার সময় চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থী লিখন বেঁচে আছে। বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সে।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর লিখন মারা গেছে বলে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।
আহত লিখন রংপুর নগরীর মধ্য বিন্যাটারি গ্রামের মেহেরুল ইসলামের ছেলে। সে কেরানীরহাট আল ইখলাস দারুস সুন্নাত দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
গত শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে চার বন্ধু মারুফ, রনি, মোরসালিন ও আবু সিদ্দিকের সঙ্গে ঘুরতে বের হন লিখন মিয়া। তারা একসঙ্গে পার্শ্ববর্তী সিংগিমারী ব্রিজ এলাকায় যান। সেখানে বন্ধুরা মিলে রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ট্রেনের সঙ্গে সেলফি তুলতে প্রস্তুতি নেয়। এ সময় রেললাইনের খুব কাছাকাছি থাকা লিখনকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রেন। এতে গুরুতর আহত হয় সে। পরে তাকে প্রাইম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেলে ৪৬২ ডাউন বুড়িমারী লোকাল ট্রেনটি সিংগিমারী ব্রিজ পার হওয়ার সময় কিশোররা মিলে ভিডিও করার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। রেললাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে না দাঁড়ানোর কারণে এমনটি হয়েছে। এটি অসচেতনতর কারণে ঘটলেও অলৌকিকভাবে ছেলেটি বেঁচে গেছে।
ঘটনাস্থলে থাকা লিখনের বন্ধু মোরসালিন জানায়, আমরা সবাই ট্রেন থেকে একটু দূরেই ছিলাম। আমি যখন ভিডিও করি লিখন বুঝতে পারেনি তার কাছাকাছি ট্রেন চলে এসেছে। বর্তমানে লিখনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
লিখনের বড় ভাই মিথুন বলেন, ফেসবুকে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর খবর দেখে অবাক হয়েছি। ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠিক নয়। আমার ছোট ভাই এখন ভালো আছে। সকল মা-বাবার প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখুন। একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।
লিখনের বাবা মেহেরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেছে। সে এখন সুস্থ আছে সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
লিখনের চাচি শিউলী বেগম বলেন, তারা ওখানে ছবি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কা লিখন আহত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ১৩-১৪টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা দেখার পর পুরোপুরি সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন। তাকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাব্বির আহমেদ জানান, টিকটক করতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় আহত সেই ছেলে জীবিত আছে। হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি আছে। তার শারিরীক অবস্থা উন্নতির দিকে। আমাদের ডিপার্টমেন্টের সবাই সার্বক্ষণিকভাবে খেয়াল রাখছেন।
মন্তব্য করুন