চাঁদপুরের হাইমচরের গাজীপুরের মনিপুর চরে চলছে রমরমা ইলিশ বিক্রির উৎসব। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ের এমন ইলিশ বিক্রিতে হতাশ হয়েছে সচেতনমহল।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে গাজীপুর ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের মনিপুর চরে ভাসমান হাট বসিয়ে ইলিশ বিক্রির এই রমরমা বাণিজ্য দেখা যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিদিন নিজস্ব টহলটিম ও শক্তিশালী সিন্ডিকেটের নজরদারির মাধ্যমে চলে এসব ইলিশ বেচাকেনা। এই সিন্ডিকেটের নেপথ্যে রয়েছেন মনিপুর এলাকার সিরাজ গাজীর ছেলে মো. বিল্লাল গাজী, রহমান গাজীর ছেলে মো. সবুজ গাজী, আব্দুল কাদের মিজির ছেলে মো. নুরু মিজি, মো. শহিদ মিজির ছেলে মো. তাজল মাঝি, মানু গাজীর ছেলে মো. মাসুদ গাজীসহ অন্যরা। এরা নিজেরাই মাছের ভাসমান আড়ত বসিয়ে ডাকের মাধ্যমে ইলিশ বিক্রি করছে। এমনকি অসাধু জেলেদের ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকার লোভে ফেলে ইলিশ নিধনে নদীতে নামতে নিষেধাজ্ঞার শুরুর দিন থেকেই বাধ্য করছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আর সন্ধ্যার পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ইলিশ বেচাকেনা হরদম চলছে। মনিপুর চরের মজিব কেল্লায় যাওয়ার প্রধান ফটক আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনে নদীর পাড় এবং টিলায় দিনে কয়েক লাখ টাকার ইলিশ বেচাকেনা চলছে, যা অনেকটা দেখেও দেখে না নীলকমল নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা।
অন্যদিকে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে নীলকমল নৌ পুলিশ ফাঁড়ির স্পিডবোট চালক জয়নালের বিরুদ্ধে। নীলকমল ফাঁড়ির এসআই আরিফের যোগসাজশে জয়নাল নদীতে নৌকা নামাচ্ছে।
চরভৈরবী ইউপির ১নং ওয়ার্ড মেম্বার ডিএম মোমিন কালবেলাকে বলেন, নৌ পুলিশ আরিফের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে স্পিডবোট চালানোর প্রভাব দেখিয়ে জয়নাল মোট ১০টি জেলেনৌকা নদীতে নামিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ইলিশ বেচাকেনা করছে। আমরা হাতেনাতে জয়নালের নৌকা ও ইলিশ ধরেছি এবং বিষয়টি নৌ পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তাকে অবগত করেছি। যদি এই হয় মা ইলিশের অভিযানের নমুনা! তাহলে যেসব জেলেরা নৌকা নিয়ে নদীতে যাচ্ছে না, এরপর থেকে তারাও নদীতে নামলে আমাদের কিছুই করার থাকবে না।
এ বিষয়ে কথা বললে অভিযোগ আড়াল করার চেষ্টা করে উল্টো জয়নালের পক্ষ নিয়ে নীল কমল নৌ পুলিশের এসআই আরিফ হোসেন কালবেলাকে বলেন, জয়নাল আগে পরে এমন করে থাকলেও এখন করে না। আর স্থানীয় বোট চালক ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ওর সমস্যা থাকায় ওরা বানোয়াট কথাবার্তা বলছে। তাছাড়া জয়নাল আমাকে অনেক তথ্য দেয়, তাই তাকে কাজে রেখেছি।
এ বিষয়ে নীলকমল নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোজাম্মেল হক কালবেলাকে বলেন, আমি নতুন, মাত্র যোগদান করেছি। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকে ছাঁটাই করা হবে। আমি কোনো অভিযুক্তকে নিয়ে কাজ করতে এখানে আসিনি। আমরা মা ইলিশের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪টি নিয়মিত মামলা, ৭টি নৌকা, ৮ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ১২ জন আসামি এবং ৫টি মোবাইল কোর্টে অংশ নিয়ে ৮০ কেজি ইলিশ এতিম দুস্থদের মাঝে বিতরণ করেছি।
মন্তব্য করুন