জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সংবিধান মেনে ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান হয়নি। সব কিছুতে সংবিধানের দোহাই দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা এখনো প্রশাসন ও রাষ্ট্রের সব গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছে।
তিনি বলেন, এসব প্রেতাত্মা নতুনভাবে সরকারকে বিপদে ফেলতে নানা রকম কূটকৌশল অবলম্বন করছে। পাশাপাশি তারা সংবিধানের দোহাই দিচ্ছে। তাদের এ কূটকৌশল এ দেশের ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় শরীয়তপুর পৌরসভা অডিটরিয়ামে জামায়াতে ইসলামী শরীয়তপুর জেলা আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। বিশেষ করে খুনি হাসিনা ভারতে বসে তার দোসরদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিবিপ্লবের দিবাস্বপ্ন দেখছে। আমি তাদের জানিয়ে দিতে চাই জামায়াতে ইসলামী অতীতের মতো বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য আজীবন লড়াই করবে, রক্ত দিবে এবং বাংলার মাটিতে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করবে। এ দেশের মানুষের কল্যাণে যে কোনো প্রকার ত্যাগ স্বীকারের জন্য রুকনদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাই।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন সফল হবে না। তাই এ সরকারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শেষ করতে হবে। যদি সরকার ছয় মাসের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করতে পারে, তাহলে ছয় মাস পরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি দুই বছর সময় লাগে তাহলে তাদের দুই বছর সময় দিতে হবে। তাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সরকারকে সময় দিতে প্রস্তুত আছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, জামায়াত একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি কোনো গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয় বরং যোগ্য ও আদর্শবাদী মানুষ গড়ার আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা আমির মাওলানা আবদুর রব হাশেমীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণের কেন্দ্রীয় নেতা আজহারুল ইসলাম, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ফরিদপুর অঞ্চল টিম সদস্য অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিস শূরা সদস্য জেলা নায়েবে আমির মাওলানা একেএম মকবুল হোসাইন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা কেএম মকবুল হোসাইন বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের ডায়নামিক নেতৃত্বে জামায়াত সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতকে ক্ষমতায় বসাতে মানুষ অধির আগ্রহ নিয়ে বসে আছে। তাই আগামীর বাংলাদেশ হবে জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে রুকন ভাইদের কাজ করে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আবদুর রব হাশেমী বলেন, ছাত্র-জনতার হাজারো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভ করেছে। এ শহীদদের রক্তের মূল্য দিতে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। নতুন কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে সাহস না করে। আপনারা সবসময় শহীদদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী আন্দোলনে আহত ভাইদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন।
মন্তব্য করুন