টাঙ্গাইলের সখীপুরে রওশন আরা (৫০) নামের এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতনের পর বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের (৫৫) বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে মা-কে হত্যার অভিযোগ এনে বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ছেলে রুবেল মিয়া (৩২)।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের শ্রীপুর মধ্যপাড়া এলাকায়। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর ওই এলাকার জাফর মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৩৫ বছর আগে উপজেলার শ্রীপুর মধ্যপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দাঁড়িপাকা গ্রামের ঈমান আলীর মেয়ে রওশন আরার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত।
এরই জেরে গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) জাহাঙ্গীর আলম স্ত্রী রওশন আরাকে প্রথমে ব্যাপক মারধর করে। এরপর বাজার থেকে ঘাস মারার বিষ এনে তাকে জোরপূর্বক খাইয়ে দেয়। পরে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে রোগীর অবস্থা স্বাভাবিক হলে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে রওশন আরাকে স্বামীর বাড়িতে আনা হয়। পরে শুক্রবার সকালে ছেলেরা রওশন আরাকে নিজ ঘরে মৃত দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ গিয়ে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল পাঠিয়ে দেয়।
জাহাঙ্গীর-রওশন আরা দম্পতির দুই ছেলে। ছোট ছেলে রনি (২৮) অন্তত ১০ বছর যাবত সৌদি আরবে থাকেন। তিনি মায়ের বিষ পানের খবর শুনে সেদিনই প্রবাস থেকে চলে আসেন।
তিনি বলেন, আমার বাবা এর আগেও মাকে অসংখ্যবার মারধর করেছে। এবারও মাকে মারধর করে বাজার থেকে বিষ এনে জোর করে খাইয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি আমার বাবার সর্বোচ্চ বিচার চাই।
মৃতের ননদ স্বরবানু জানান, বেশ কিছুদিন আগে স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে জাহাঙ্গীর অপকর্ম করে ধরা পড়লে গ্রাম্য শালিসে তাকে অন্তত দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই ঘটনার পর সে আরেক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। গুঞ্জন আছে জাহাঙ্গীর ওই নারীকে বিয়ে করেছে। নিয়মিত ওই নারীকে টাকা পয়সাও দিত। স্বামীর এমন অপকর্মের প্রতিবাদ করলে জাহাঙ্গীর রওশন আরাকে মারধর করত। এবার তো মেরেই ফেললো।
সখীপুর থানার ওসি মো. জাকির হোসেন কালবেলাকে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃতের বড় ছেলে রুবেল তার পিতা জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিকে আইনের আওতায় আনা হবে।
মন্তব্য করুন