বিএনপি আগামীতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে দল ও অঙ্গ সংগঠনের কেউ কোনো অন্যায় করে পার পাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে যৌথ কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি। জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে দিকনিদের্শনামূলক এই যৌথ কর্মিসভা অনুষ্ঠিত হয়।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে যুবদল সভাপতি বলেন, কেউ যদি কোথাও দুষ্টুমি বা কারো প্রতি অন্যায় করে- তাদেরকে বোঝাবেন; না বুঝলে আমাদের জানান, আমরা তখন ব্যবস্থা নেব। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, বিএনপি আগামীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে দল ও অঙ্গ সংগঠনের কেউ কোনো অন্যায় করে পার পাবে না। ‘দুষ্টু লোকদের স্থান বিএনপিতে হবে না’ বলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি (তারেক রহমান) বলেছেন, মানুষের পাশে থেকে ইতিবাচক কাজের মধ্য দিয়ে তাদের মন জয় করতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সেই নির্দেশনা মেনেই আমরা কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী অনুপ্রবেশকারীদের বিএনপিতে জায়গা দেওয়া যাবে না। সারা দেশেই যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল তথা বিএনপিদলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি এবং নিচ্ছি। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে কিংবা পদধারী কোনো নেতাও যদি কোনো প্রকার চাঁদাবাজি-দখলদারির সাথে যুক্ত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে দল ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে রয়েছে। দুষ্টু লোকদের স্থান বিএনপিতে হবে না।
কর্মিসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, যারা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করেছে, ভবিষ্যতে কাজ করতে পারবে, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে নিয়োজিত ছিল, যারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও দেশের মালিকানা এ দেশের মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করেছে সর্বোপরি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক রাজনীতির ম্যান্ডেট যারা বুঝতে পারবে, তাদেরকে আগামী দিনের নেতৃত্বে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত করছি।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী যে রাষ্ট্র কায়েম হয়েছিল, সেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। সেখানে মাঠ পর্যায়ে যারা শক্তিশালীভাবে কাজ করেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনপরবর্তী সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশেষ নির্দেশনাগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
সভাপতির বক্তব্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, সাধারণ জনগণ গ্রেপ্তার হয়, মধু-বদু-যদু গ্রেপ্তার হয়, কিন্তু শেখ পরিবারের কেউ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। কেন? কোথায় শেখ সেলিম, কোথায় শেখ হেলাল, কোথায় শেখ তন্ময়? প্রশাসনের ভাইদের বলতে চাই, এসব নাটক দেখানো গ্রেপ্তার করে লাভ হবে না। শেখ পরিবারের দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার করতে হবে। এটা দেশবাসীর আকাঙ্ক্ষা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। আপনাদের মধ্যে যদি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার খায়েস থাকে, তাহলে ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের কী হয়েছিল-সেটা আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিন। দেশের মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানের সঞ্চালনায় কর্মিসভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুর রহমান আমিন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল হাসান পলাশ অয়ন, ফারুক হোসেন, সাতক্ষীরা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিক, কেন্দ্রীয় নেতা মামুন হাসেমী দিপু প্রমুখ।
মন্তব্য করুন