নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে এলাকায় যৌথভাবে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। শুধু প্রভাব বিস্তারই নয় বরং এই দুই নেতা একত্রে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের রাজত্বও কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত বিএনপির নেতার নাম আব্দুল লতিফ। তিনি সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। অন্যদিকে রাজনৈতিক ভোল পাল্টে তার সহযোগী হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান। আগের দখলদারিত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি মামলা থেকে বাঁচতে তার এই কৌশল বলে জ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের।
বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থেকেই এলাকায় তান্ডব শুরু করেছেন আব্দুল লতিফ। আর এসব কাজে তিনি সঙ্গে নিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমানকে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে জামপুর ইউনিয়নের যুবদলের সভাপতি দিপু হোসেন, বিএনপি ক্লাবের নাম ভাঙিয়ে একটি সরকারি জায়গা দখল করেন লতিফ মেম্বার। পরে সেই জায়গায় দোকান ঘর তুলে গত ১৭ বছর ধরে ভাড়া তুলছেন তিনি। তার এসব কর্মকাণ্ড এতদিন সমর্থন করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান। তবে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর যৌথভাবে এলাকায় দখলদারিত্বের রাজত্ব বসিয়েছেন এই দুজন। তাদের নির্যাতনে ইতোমধ্যেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।
বিএনপির কর্মী সাদেক হোসেন জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে জামপুর কাঁচাবাজারের প্রতিটি দোকান থেকে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা চাঁদা তোলেন। কেউ দিতে বিলম্ব বা অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি ও দোকান উচ্ছেদ করে দেন তারা।
বিএনপির আরেক কর্মী ইলিয়াস সরকার জানান, আওয়ামী লীগের নেতা হয়েও মতিউর বিএনপি নেতার শেল্টারে এলাকায় সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলা ও তাদের বাড়িছাড়া করার হুমকি দেন। এমনকি ওই এলাকার কেউ যদি জায়গা ক্রয় কিংবা বিক্রয় করে তাদের চাঁদা দিতে হয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও আতংক সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ এর আগেও আওয়ামী লীগ নেতা মতিউরের সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জনগণের জন্য বরাদ্দ টিন, চাল ও অর্থ লুটপাট এবং চাদাঁবাজিতে লিপ্ত ছিল।
ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, নতুন বাংলাদেশে এমন চাঁদাবাজ ও দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের যথাযথ ভূমিকা প্রয়োজন।
তবে অভিযোগের বিষয়টি জানতে চেষ্টা করেও আওয়ামী লীগ নেতা মতিউরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ জানান, একটি কুচক্রীমহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিষয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমি কোনো অবৈধ ও খারাপ কাজে লিপ্ত নই।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি জানান, বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন