জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিদেশে বন্ধু থাকবে কিন্তু কোনো প্রভুত্ববাদ মেনে নেওয়া হবে না। কেউ যদি প্রভুত্ব করতে আসে তাহলে জাতি তাদের উচিত জবাব দেবে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে টেংকের পাড় মাঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতথিরি বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে হবে যেখানে অন্য কোনো দেশ বা শক্তির অধীনতা থাকবে না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও বিশ্ব দরবারে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবে। জামায়াতে ইসলামী এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে যেখানে নারী, পুরুষ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে কোনো নাগরিক তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। যেখানে সবাই মিলেমিশে সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অহিংসামুক্ত সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, এমন একটি সমাজ গড়া হবে যেখানে আদালত প্রাঙ্গণে কোনো বিচারপ্রার্থীকে হয়রানির শিকার হতে হবে না। বিচারক দুর্নীতিমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে রাষ্ট্রের আইন ও বিবেক দিয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করবে।
জামায়াতের আমির বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার উন্নয়নের নামে জনগণের চোখে ধোঁকা দিয়ে নিজেদের কিসমত গড়তে চেয়েছিল। এই ফ্যাসিস্ট দল ও তার দোসররা জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছে। গত ৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হলেও বিগত সরকারের সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হয়নি। তারা জাতির ঘাড়ে বসে আছে। এই সিন্ডিকেট না ভাঙলে দেশের মানুষ আরও নির্যাতিত হবে।
জামায়াতের এ শীর্ষ নেতা বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে দেশের মানুষ স্বৈরাচার সরকার দ্বারা নির্যাতিত। তবে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী সবচেয়ে নির্যাতিত ও মজলুম দল। এই দলের নেতাদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিচারের নামে জুলুম করে গুম, খুন করা হয়েছে। বিগত সরকার জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে নানা পাঁয়তারা করেছে।
তিনি আরও বলেন, তারা গণআন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে অন্যায়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রতীক কেড়ে নেয়। তবে জামায়াতে ইসলামী প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তবে দেশপ্রেমী এবং আলেম-ওলামাদের যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার করতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, স্বৈরাচার সরকারের কোনো দোসর যেন রাষ্ট্রের কোনো স্তরে না থাকে। তারা থাকলে এই দেশ ও সরকারকে ব্যর্থ করে দিবে। জনগণের বিপ্লবকে ব্যর্থ করে স্বপ্নের মৃত্যু ঘটাবে।
কর্মী সম্মেলনে কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতে ইসলামের আমির মোহাম্মদ গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ মোবারক হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।
কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য আব্দুস সাত্তার, কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাবেক আমির সৈয়দ গোলাম সারোয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার নায়েবে আমির কাজী মো. ইয়াকুব আলী, জেলা ইসলামী ছাত্রশবিরের সভাপতি মো. আতকিুল ইসলাম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন