হিজাব পরায় আবারও এক শিক্ষককে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে। এবারে হেনস্তার শিকার হয়েছেন পারভীন আক্তার নামে এক শিক্ষক। ঘটনার শিকার পারভীন উপজেলার তেঘরিয়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
এ নিয়ে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা সুলতানার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগপত্রে পারভীন আক্তার লিখেছেন, চলতি মাসের ৮ অক্টোবর শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হক তেঘরিয়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। তখন আমি হিজাব পরিহিত অবস্থায় ছিলাম। এ সময় ওই কর্মকর্তা দাম্ভিকতার সঙ্গে তর্জনি আঙ্গুল উপর থেকে নিচু করে অবজ্ঞার সুরে ইশারা করেন এবং বলেন- ‘এটা খুলেন। এভাবে থাকা যাবে না’। কিন্তু আমি স্বাভাবিকভাবেই হিজাব খুলতে অসম্মতি জানাই এবং বলি, ‘হিজাবের কারণে যদি একাডেমিক কোনো কাজে ব্যঘাত ঘটে; তবে আপনি আমাকে বলতে পারেন। ব্যক্তিগত এবং ধর্মীয় বিষয়ে আপনি আমাকে বাধ্য করতে পারেন না’। এতে ওই কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে- হিজাব খোলার জন্য উপর্যুপরি চাপ প্রয়োগ করেন এবং আমাকে নানাভাবে অপমানিত করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষকের অভিযোগ, ওই শিক্ষা কর্মকর্তা তার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা ও অধিকারে আঘাত করেছেন। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এবং শিক্ষা অফিসে অনেক হিজাব পরিহিত শিক্ষিক তার (শিক্ষা কর্মকর্তা) এমন অনাকাঙ্খিত আচরণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য কেউ মুখ খুলতে চায় না।
তিনি আরও বলেন, সবশেষ শিক্ষা বিস্তরণ প্রশিক্ষণেও কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী নেকাব পরিহিত অবস্থায় থাকাকালীন সময়েও ওই কর্মকর্তা হিজাব ও ইসলাম সম্পর্কে নানারকম কটুক্তি ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হক বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই শিক্ষিককে নাম ও কোনো বিষয়ে ক্লাস নেন সেটি জানতে চেয়েছি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষককে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি ভালো বলতে পারবেন। প্রধানশিক্ষক ঘটনাস্থলে ছিলেন কিনা জানতে চাইলে মাহমুদুল হক জানান প্রধানশিক্ষক স্কুলেই ছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, ঝামেলার সময় বাইরে ব্যস্ত ছিলাম। তবে স্কুলের দপ্তরির মাধ্যমে জানতে পেরেছি ওই শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আমার স্কুলের শিক্ষিক পারভীনের বাকবিতণ্ডা হয়েছে। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষক জানান, সেদিন শিক্ষা কর্মকর্তার মাহমুদুল হক পর্দা নিয়ে কটুক্তি ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করায় শিক্ষিক পারভীন আক্তারের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা সুলতানার সরকারি ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মন্তব্য করুন