কুড়িগ্রামের উলিপুরে একদিনের ব্যবধানে কাঁচামরিচ কেজি প্রতি ৩০০ টাকা কমে পাইকারিতে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) কাঁচামরিচ কেজি প্রতি ৩০০ টাকা বিক্রি হয়। এর আগে সোমবার ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।
সরেজমিনে মঙ্গলবার দুপুরে উলিপুর সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা পাইকারদের কাছে বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি করছেন ৮০ টাকা তা খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, আলু দেশি ৬০ টাকা খুচরায় ৭০ টাকা, শসা ৬০ টাকা খুচরায় ৭০ টাকা, কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা খুচরায় ৩৫০ টাকা, করলা ৬০ টাকা খুচরায় ৭০ টাকা, পেঁয়াজ এলসি ১১০ টাকা খুচরা ১২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা খুচরায় ১৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা খুচরায় ৪০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা খুচরায় ৮০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা খুচরায় ২৪০ টাকা, আদা ২৪০ খুচরায় ২৮০ টাকা, শুকনা মরিচ ৩৮০ টাকা খুচরায় ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ঢেঁড়স ৫০ টাকা খুচরায় ৬০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা খুচরা ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা খুচরা ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ছোট বড় ভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা খুচরায় ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০ টাকা খুচরা ২০০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা খুচরায় ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, খুচরায় ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা সবজি বিক্রেতা জিয়ন মিয়া (৪৫), মাইদুল ইসলাম (৩৮), নুর ইসলাম (৬৫) ও দুলাল মিয়া জানান, আমরা পাইকারি দামের চেয়ে সামান্য লাভ করেই সবজি বিক্রি করে থাকি। কিছুদিন আগে সবজির বাজার কম ছিল। তাই ক্রেতারা বেশি ক্রয় করত। এখন দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতারা চাহিদার তুলনায় কম ক্রয় করছেন। এখন স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ধরনের সবজির আমদানি না হওয়ায় দাম বেড়েছে বিক্রিও কমেছে।
ক্রেতা মফিজুল হক (৭০) বলেন, সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। এটা সম্পূর্ণ কারসাজি। বাজার তো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে ৪০ থেকে ১২০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি নেই।
খুচরা বাজারে সবজি নিতে আসা গৃহবধূ স্বপ্না আক্তার (৪০), হাওয়ানুর বেগম (৩৮) ও ইউনুস আলী (৬৫) বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে আজ সবজির কেজি প্রতি ২০-৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার কিছু কিছু সবজির দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। মরিচ ছিল ৬০০ টাকা আজ ৩৫০ টাকা কেজি, আলু ছিল ৫৫ টাকা আজ ৬৫ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ছিল ১১০ টাকা আজ ১২০ টাকা কেজি, পটোল ৬০ টাকা কেজি থাকলেও আজ ৮০ টাকা কেজি, বেগুন ৮০ টাকা কেজি থাকলেও আজ ১০০ টাকা কেজি, মুলা ৪০ টাকা থাকলেও আজ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের এই সময়ে সবজির দাম অনেক কম ছিল। এ বছর এ সময়ে সবজির দাম অনেক বাড়তে শুরু করছে। এ ছাড়া মরিচের দাম, বেগুনের দাম, করলার দাম, পেঁয়াজের দাম ও আলুর দাম না কমিয়ে বরং বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের মতে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন চলা খুব কঠিন হয়ে গেছে বলে জানান তারা।
সবজি বাজারের আড়তদার মুকুল মিয়া (৬৮), আলম মিয়া (৬৫) ও আনারুল মিয়া (৪৫) বলেন, বর্তমান স্থানীয় ভাবে সবজির আমদানি না হওয়ায় সবজির দাম কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। তাছাড়া মরিচ, আলু, বেগুন ও পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজির বাজার বৃদ্ধি রয়েছে। স্থানীয় ভাবে সবজির আমদানি শুরু হলে কিছুটা কমতে শুরু হবে। এ ছাড়া আমাদের এলাকায় ধান, পাট, ভুট্টা বেশি চাষাবাদ করা হয়। এ কারণে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে সবজি নিয়ে আসতে হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আসে দিনাজপুর, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও থেকে।
তারা আরও বলেন, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর মোকাম (পাইকারি বাজার) গুলোতে সবজির দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদের এখানে আমদানি কমে যায় ফলে দামও বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া গাড়ি ভাড়ার উপর কিছুটা দাম কম বা বেশি হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, এবার অসময়ে বর্ষা ও বন্যার কারণে স্থানীয় পর্যায়ে সবজি চাষে ব্যাঘাত ঘটেছে। স্থানীয় ভাবে সবজির আমদানি না হলে বাজারে সবজির মূল্য স্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাবে। স্থানীয় ভাবে যে সব সবজি চাষ হয় তাতে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। কৃষকদের বেশি বেশি করে সবজি চাষের পরামর্শ দেওয়া অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন