অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আমরা খুব কম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেব। জনগণ যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করব।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবিরের শততম জন্মবার্ষিকীতে এ কথা বলেন তিনি।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, এতদিন ভোটের সিস্টেম ও কালচারটা নষ্ট হয়ে গেছিল। নির্বাচন কমিশনকে সাজিয়ে একটা ফেয়ার, ফ্রি, ইমপারসিয়াল নির্বাচন দেব। আপনারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। যারা জনগণের মেনডেট পাবে, আমরা তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেব।
তিনি আরও বলেন, আমরা শাসন করতে আসিনি। আগামী দিনে যারা শাসন করবে, আমরা তাদের জন্য পথ খুলে দিতে এসেছি। মনে রাখবেন, সব ধর্মে কিছু দুর্বৃত্ত আছে, তাদের কোনো ধর্ম নেই। তারা অপরাধী। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য উপাসনালয়ে হামলা ও আঘাত করে তারা। এদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রত্যেককে সোচ্চার হতে হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে। পাহাড়ে অশান্তি থাকলে সমতল শান্তিতে থাকতে পারে না। পাহাড় এবং সমতলে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।
বিভেদ-সংঘাত দেশকে পিছিয়ে দেবে উল্লেখ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় রাষ্ট্রকে ফুল বাগানের মতো পরিচর্যার আহ্বান জানিয়ে আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমরা যদি আগামী দিনের সুন্দর ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই তাহলে আমাদের একে অপরের হাত ধরে এগিয়ে যেতে হবে। বিভেদ আমাদের ধ্বংস করে দেবে, সংঘাত আমাদের পিছিয়ে ফেলবে। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ সাজানো বাগানের মতো।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের বাংলাদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী আছে। এটা একটা বাগানের মতো। এটাকে আমাদের পরিচর্যা ও লালন করতে হবে। আর না হলে বাগানে ফুল ফুটবে না। বাগানের গাছ মারা যাবে। এই ঐতিহ্য পারস্পরিক সৌহার্দ্য আমাদের লালন করতে হবে।
বৌদ্ধ নেতাদের কাছ থেকে ভারতের বুদ্ধগয়ায় তীর্থযাত্রায় ভিসাপ্রাপ্তির বিষয়ে সমস্যার কথা শুনে তিনি এ বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনে কথা বলবেন বলেন জানান। এ ছাড়া প্রবারণা পূর্ণিমায় সরকারি ছুটির বিষয়ে বৌদ্ধ নেতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বৌদ্ধ সমিতির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার নিকট দাবি উত্থাপন করলে তিনি এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
উপ-সংঘরাজ শাসনপ্রিয় মহাস্থবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া।
প্রফেসর তুষার কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক ববি বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইউএসটিসির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন আদর্শ কুমার বড়ুয়া, অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক সত্যপ্রিয় বড়ুয়া প্রমুখ।
মন্তব্য করুন