হেমন্তের সন্ধিক্ষণে শরতের শেষান্তে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য মেলবন্ধন রচিত হলো। রোববার (১৩ অক্টোবর) পড়ন্ত বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে বিশাল বিজয়া মঞ্চে বক্তারা বলেছেন, শারদীয় দুর্গোৎসব বাঙালির সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হলেও এখন সেটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব যেন সবার’- এই ধারণায় বাংলাদেশের সব নাগরিক ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে এর আমেজ, আনন্দ উপভোগ করে আসছে যুগ-যুগান্ত ধরে।
বক্তারা আরও বলেন, ‘ধর্মীয় সৌহার্দ্য, সম্প্রীতির অন্যতম পীঠভূমি কক্সবাজার। সম্প্রীতি সর্বদাই শান্তি ডেকে আনে। আসুন আমরা সবাই মিলে একটি উন্নত, বাসযোগ্য, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ি।’
জানা যায়, দুর্গাপূজার শেষ দিনে বিজয়া দশমীতে বিষাদ মনে হাজারো পূজার্থী, ভক্ত সাগরে প্রায় ২৫০টি প্রতিমা ভাসিয়ে দেন। বেলা আড়াইটা থেকে ট্রাকবোঝাই করে আনা হয় প্রতিমা। বিকেল ৪টার আগে কক্সবাজার পৌরসভা, সদর উপজেলা, ঈদগাঁও উপজেলা, ঝিলংজা, উখিয়া, টেকনাক থেকে সমুদ্র সৈকতে আনা হয় প্রায় ২৫০টি প্রতিমা। প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে লাবণী পয়েন্টে নির্মিত হয় সুবিশাল বিজয়া মঞ্চ। বেলা ৩টা থেকে মঞ্চে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিজয় দশমীর আলোচনা সভা। বিকেল ৫টায় মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। সাড়ে ৫টার মধ্যে বিষাদ মনে একে একে ভাসিয়ে দেওয়া হয় প্রায় আড়াই শতাধিক প্রতিমা। এ সময় প্রতিমা বিসর্জন উপভোগ করতে সৈকতে উপস্থিত হয় লাখো পর্যটক ও পূজার্থী।
এর আগে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠুর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দীপক শর্মা দিপুর সঞ্চালনায় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে অতিথির শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল, জেলা প্রশাসক মো. সালাউদ্দিন, পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ, র্যাবের-১৫ সিও এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন, কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজা, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা সপ্না, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল, শিক্ষাবিদ প্রফেসর সোমেশ্বর চক্রবর্তী, আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক খান কায়সার।
বক্তব্য রাখেন,পূজা উদযাপন পরিষদ নেতা রতন দাশ, রাজবিহারি দাশ, দোলন ধর প্রমুখ।
মন্তব্য করুন