রংপুরের বদরগঞ্জে সামাজিক বন বিভাগের গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। গাছ কাটার প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে তাদেরকে হুমকি দেন অভিযুক্ত ওই নেতা।
অভিযুক্ত আব্দুল আজিজ লোহানীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য। তবে অভিযোগ আছে, এর আগেও তার বিরুদ্ধে বনের গাছ কাটার বিষয়টি সামনে এলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি বন বিভাগ।
জানা যায়, বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে বন বিভাগের বিভিন্ন বাগান থেকে বিপুল পরিমাণ গাছ কেটে নিয়ে যান তিনি। পরে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কাছে সেগুলো বিক্রি করেন। এ কথা স্বীকার করেছেন ওই ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় বাগানগুলোতে বিট কর্মকর্তা ও অফিস স্টাফরা পরিদর্শনে গেলে এলাকাবাসীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের সুবিধাভোগী (ডিডধারী) স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি সিন্ডিকেট বছরের পর বছর ধরে গাছ চুরির সঙ্গে জড়িত। বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এই সিন্ডিকেটটি গাছ কেটে বিক্রি করে যার ভাগ পান বিট কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করলেও কোনো লাভই হয়নি উল্টো জামায়াত-শিবির বলে মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
তবে বন বিভাগের দাবি, এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে সাবেক সংসদ সদস্য আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক বাসায় ডেকে নিয়ে গিয়ে ভয়ভীতি দেখান। রাজনৈতিক প্রভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি।
গোলাম রব্বানী নামের স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ‘তারা সব সময় গাছ কাটে। বন বিভাগের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয় না। আমরা সরকারি সম্পদ রক্ষা করতে চাই।’
সিদু লোহানী নামের আরেকজন বলেন, আজিজ মেম্বারের বাগানের গাছ কাটার খবর পেয়ে আমরা সেখানে গেলে আমাদের ওপর চড়াও হয়। নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দেয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় গাছ কাটার প্রতিবাদ করতে গেলে আওয়ামী লীগের প্রভাবে আমাদের কোণঠাসা করে রাখা হতো।
গাছ কেনার কথা স্বীকার করে সাইদুল ইসলাম নামের ওই ব্যবসায়ী জানান, গাছ বিক্রির কথা বলে ১৪ হাজার টাকা বায়না নিয়েছিল আজিজ মেম্বার। তাই গাছ কেটে আমাকে দিয়ে গেছে।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল আজিজ বলেন, ‘সব ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা। আমি কখনো গাছ কাটিনি। কারা করেছে আমি জানি না।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লোহানীপাড়া বিট কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম বলেন, জনবল সংকটের কারণে গাছ চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। তারপরেও এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত যারা তাদের বিরুদ্ধে আমরা আগেও আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। এবারের ঘটনায়ও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন