বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ড. মোবারক হোসাইন বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী কখনো কোনো কিছু লুকানো পছন্দ করে না। কখনো অসত্যকে সত্য বলে প্রচার ও প্রকাশের প্রক্রিয়া জামায়াতের ইতিহাসে নেই। জামায়াত কখনো উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদে সমর্থন করে না, জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয় না।
বৃহস্পতিবার ( ১০ অক্টোবর ) সন্ধ্যায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার গ্রাম বাংলা রিসোর্টে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোবারক হোসাইন বলেন, ‘সমাজ ও রাষ্ট্রের বৈষম্য দূর করতেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতের কাজ চলমান ছিল এবং আছে। জামায়াতকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। সাধারণ মানুষকে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। অথচ জামায়াত শিবির সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। তবে বিগত সরকারের সময় আমাদেরকে প্রকাশ্যে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাকে পাওয়া যেত তাকেই গ্রেপ্তার করা হতো। কাউকে বিয়ে-দাওয়াতের অনুষ্ঠান এমনকি বাজার থেকে গোপন বৈঠকের অপবাদ দিয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হতো। এ দেশের নাগরিক হিসেবে স্বাধীন মতপ্রকাশ তো দূরে থাক আমাদেরকে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতেও দেওয়া হয়নি। এত অত্যাচার ও জুলুম করা হয়েছে যা পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ইশারায় গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৫ আগস্ট অত্যাচারী শাসকের পতন হয়েছে। ছাত্রদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে সরকার পতন আন্দোলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। সরকার পতনের আন্দোলনে সব শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণ ও ভূমিকা ছিল। যার ফলেই জুলুমবাজ সরকারের পতন ঘটে। এখন এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। স্বাধীনভাবে কাজ করার ও কথা বলার স্বাধীনতা পেয়েছে। সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যা বলার অধিকার পেয়েছে। অন্যায়কে অন্যায় আর ন্যায়কে ন্যায় বলার বাকস্বাধীনতা পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে জামায়াতের পক্ষ থেকে কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। তবে জামায়াতের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে সুনির্দিষ্ট কোনো ডেড লাইন দেওয়া হয়নি যে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য যতটুকু যৌক্তিক সময় প্রয়োজন ততটুকু সময়ই তাদের দেওয়া উচিত এবং যৌক্তিক সময়ের বেশি নয়। একটি অন্তর্বর্তী সরকারের নির্ধারিত সময়ের জন্য যতটুকু তারা রাষ্ট্র সংস্কার বা মেরামত করতে চান সেটা করেই দ্রুত একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর। এ সংস্কার কাজে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আমাদের সকলকেই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ হবে।’
সভায় জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শাখার নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করিমের সভাপতিত্ব ও সেক্রেটারি মাওলানা আনিছুর রহমানের সঞ্চালনা কেরে। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা শুরা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মিজানুর রহমান আতিকী, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সহসেক্রেটারি মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহজালাল, উপজেলা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুর রহমান, শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আমিরুল ইসলামসহ ব্রাহ্মণপাড়ায় কর্মরত ইলেকট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
মন্তব্য করুন