মৃত্যুর আগে ছেলে সাইদুল মিয়াকে সুস্থ করতে চান মা। কান্না করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন মা বেগম। আমার চোখের আড়াল হলেই আক্রমণ করে মানুষের ওপর, চলে যায় এদিক সেদিক। ঘটান বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা। এসব এড়াতে মা তার সন্তান সাইদুল মিয়ার পায়ে পরিয়েছেন লোহার শিকল।
সরেজমিন জানা যায়, নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের বাসিন্দা সাইদুল মিয়া (৩৮)। চার বছর আগেও ছিলেন পুরোপুরি সুস্থ। ৩৮ বছর বয়সী সাইদুল মিয়া কাজকর্ম করে জীবন অতিবাহিত করতেন। ছোটবেলায় হারিয়েছেন বাবাকে। তার সংসারে রয়েছে একটি কন্যাসন্তান। উন্নত জীবনযাপনের আশায় স্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসে। এই প্রবাসী কাল হয় সাইদুল মিয়ার জীবনে। প্রবাসে যাওয়ার পর স্ত্রী ডিভোর্স দেয় সাইদুল মিয়াকে। আদরের একমাত্র কন্যাসন্তানকে তার থেকে কেড়ে নেয় স্ত্রী। তারপর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন সাইদুল মিয়া।
মানসিক ভারসাম্য হারানোর পর তার একমাত্র আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেন মা বেগম। বেগম মানুষের বাড়িতে কাজকর্ম করে কোনোরকমে দিনের খোরাক জোটানো। টানাটানির সংসারে বেগম ইচ্ছা থাকার পরও অর্থাভাবে সন্তানকে করাতে পারেননি চিকিৎসা। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে আদরের সন্তানকে করেছেন শিকলবন্দি।
মা বেগম জানান, ‘চেয়ারম্যানের কাছে কইছি, আরও কত মানুষের কাছে কইছি, কেউ আমার পোলারে সাহায্য করল না। আমার পোলারে চিকিৎসা করাইলে ভালা হইয়া যাইত। আমি মরার আগে আমার পোলারে সুস্থ করতে চাই। আমি মইরা গেলে তারে দেখার কেউ নাই।’
স্থানীয় মেম্বার লাকি আক্তার কালবেলাকে বলেন, আমি এই বিষয়টি চেয়ারম্যানকে অবগত করব। আমরা তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান কালবেলাকে জানান, আমরা সাইদুল মিয়াকে সাহায্য করব। তার পরিবারকে বলেছি, সাইদুল মিয়ার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যেন আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।
মন্তব্য করুন