কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টা ও মৎস্য খামার থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। দুটি মামলায় আরও ১৫ জনকে এজাহার নামীয় আসামি করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাতে আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা ও অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া চাঁদাবাজির মামলাটি করেন। মামলার বাদী আলমগীর হোসেন মুরাদনগর সদরের নায়েব আলীর ছেলে। অপর মামলার বাদী অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের ২০ মার্চ (শুক্রবার) রাতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদীয়া ইলেকট্রনিক্সের মালিক ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন তার দোকানে অবস্থান করছিলেন। এ সময় সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের নির্দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪০/৪৫ নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার দোকানে এসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে মাথা, হাত ও পায়ে জখম করে। এ সময় দোকানের ক্যাশে থাকা তিন লাখ সত্তর হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এই মামলায় সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, মুরাদনগর সদরের হেলাল উদ্দিন, শামীম, হাসান মিয়াসহ ১৫ জনকে এজাহার নামীয় ছাড়াও ৪৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। চাঁদাবাজি মামলার বাদী অ্যাডভোকেট মহসীন বলেন, ২০১৯ সালে মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের দড়িকান্দি বিলে কৃষকদের থেকে ৩০০ কানি জমি ১২ বছরের জন্য পত্তন নিয়ে মোল্লা ফিশারিজ নামে মাছের প্রজেক্ট গড়ে তুলি। এই প্রজেক্টে মাছ চাষ করার জন্য দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের নিকট ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বাৎসরিক হিসেবে ভাড়া প্রদান করি। প্রজেক্টে মাছ চাষের পর ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান যখন মাছ ধরতে আসেন তখন সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের নির্দেশে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার খামার গ্রামের রফিকুল ইসলাম (টিয়া রফিকের নেতৃত্বে ১০/১৫ সন্ত্রাসী এসে মোল্লা ফিশারিজ প্রজেক্টে মাছ ধরা বন্ধ করে দেয় এবং ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে প্রজেক্টের মাছ ধরতে দিবে না বলে হুমকি প্রদান করে। এ সময় বাধ্য হয়ে প্রজেক্টের এক বছরের ভাড়ার ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা রুপালী ব্যাংকের একটি হিসাব নম্বর থেকে সাবেক এমপির উপস্থিতিতে চেকের মাধ্যমে রফিকুল ইসলাম নিয়ে নেয়। এই মামলায় এজাহার নামীয় দুজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক বলেন, হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে থানায় ২টি মামলা হয়েছে। তদন্ত ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মন্তব্য করুন