হবিগঞ্জের মাধবপুরে এক হতদরিদ্র বৃদ্ধার দুই সমস্যা তাকে কুরে খাচ্ছে। দেখার কেউ নেই। প্রথমত, ৫৭/১৭-১৮ ইং বন্দোবস্ত মোকদ্দমার মাধ্যমে পাওয়া ৫ শতক জমি ৫ বছর ধরে দখল না পাওয়া। দ্বিতীয়ত, বৃদ্ধার টিনের ঘরের ওপর বিপজ্জনক সরকারি আকাশমনি গাছ, যা সরকারি বাধায় অপসারণও করতে পারছেন না। ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার নাম আয়েশা আক্তার (৭০), উপজেলার বহরা ইউপির উত্তরশিক গ্রামের আইয়ুব খান মোড়ে তার বাড়ি।
জানা যায়, এক যুগ আগে বৃদ্ধার স্বামী মারা যায়। ফলে পরের জমিতে থাকেন। ভূমিহীন বিবেচনায় ২০১৯ সালে মাধবপুরে ভূমি অফিস থেকে তাকে ৫ শতক জমি প্রদান করে। জমির অবস্থান পাশের ধর্মঘর ইউপির জয়নগর মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের ৫৯নং দাগে। ৫ বছরেও সে জমির দখল পাননি তিনি। এসিল্যান্ড অফিসে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করেও পাননি কোনো ফল।
বৃদ্ধার রয়েছে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান। বয়সের ভারে এতই দুর্বল হয়ে পড়েছেন যে, দোকানটাও চালাতে পারছেন না। চড়া সুদের মূলধনে করা দোকানের বাকি টাকাও উঠাতে পারছেন না। প্রায়ই সুদি কারবারিরা টাকার জন্য হানা দেন। অন্যদিকে, রাস্তার পাশের একটি আকাশমনি মরা গাছ তার ঘরের ওপর বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। সরকারি বাধায় মরা গাছটিও সরাতে না পারায় চরম শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
সম্প্রতি গাছটির একটি ডাল কাটলে মাধবপুরের ইউএনও অফিস থেকে তাকে শাসানো হয়। ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার জানান, ‘আমার দেহ আর চলে না। বিগত কয়েক দিন আগে একটি ডাল সরিয়েছিলাম। মাধবপুরের ইউএনও স্যার তহশিলদারকে পাঠিয়েছিলেন আমার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার জন্য। তখন স্থানীয় মুজাহিদ মসি নামে এক সাংবাদিক ভাই আমার পক্ষ নিয়েছিল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন কালবেলাকে জানান, মহিলার গাছটি অপসারণের জন্য আমিও কথা বলেছিলাম; কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ৫ বছর ধরে বন্দোবস্তের জমি দখল না পাওয়া চরম স্বৈরাচার।
স্থানীয় ভূমি অফিসের তহশিলদার মজিবুর রহমান কালবেলাকে জানান, আমরা তো অর্ডার পালন করি। এসব বিষয়ে কোনো নির্দেশনা এলে আমরা পালন করব। এ বিষয়ে মাধবপুরের ইউএনও একে এম ফয়সালকে একাধিক ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রভাংশু সোম মহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালবেলাকে জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে।
মন্তব্য করুন