আওয়ামী লীগ সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে দীর্ঘ তেরো বছর ধরে প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের বাইরে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসনের ৫বারের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ।
এলাকায় তুমুল জনপ্রিয়তার কারণে ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়িয়ে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এই নেতাকে দেশে আসতে দেয়নি ক্ষমতাশীনরা।
২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তার প্রাণপ্রিয় মায়ের মৃত্যু হলেও মায়ের জানাজায় অংশ নিতে পারেননি তিনি। মায়ের লাশটা দাফনের জন্যও তাকে সুযোগ দেয়নি স্বৈরশাসকরা। পাশাপাশি উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ৪ সহস্রাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৬৯টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার।
মুরাদনগরে তিনি এতটাই জনপ্রিয় যে, রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরেও অনেক ভক্ত-অনুসারী রয়েছে এ নেতার। এলাকার তুমুল জনপ্রিয় ও বর্ষীয়ান এই নেতা বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে অবস্থান করছেন।
গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলা, ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতি হলেও সাবেক এমপি কায়কোবাদের কঠোর অবস্থান ও দিক-নির্দেশনায় মুরাদনগর উপজেলা এমন সহিংস ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে।
এছাড়াও তিনি বর্তমান সময়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য ও সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। এক যুগের বেশি সময় ধরে দেখতে না পারা প্রিয় নেতাকে একনজর দেখার জন্য উম্মুখ হয়ে আছে মুরাদনগরের সর্বস্তরের জনগণ। তাদের মুখে শুধু একটাই প্রশ্ন, কবে দেশে আসছেন তাদের দাদাভাই।
জানা যায়, কুমিল্লা জেলার ভৌগোলিক অবস্থানে সবচেয়ে বড় উপজেলা হলো মুরাদনগর। ৩৪০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বৃহৎ উপজেলাটি ২টি থানা, ২২টি ইউনিয়ন ও ৩১৫টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে সম্পূর্ণই ভিন্ন।
সাড়ে ছয় লাখ জনগণের বিশাল এ জনপদের সাধারণ মানুষকে স্বার্থহীন ভালোবাসা দিয়ে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন ৫ বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জাল হোসাইন কায়কোবাদ।
তার দক্ষ নেতৃত্বের বদৌলতে গড়ে ওঠা মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি সব মামলা-হামলা মোকাবিলা করে এখন কঠিন ইস্পাতের মতো ঐক্যবদ্ধ। দাদা কায়কোবাদ মুরাদনগরবাসীর অত্যন্ত প্রিয় মুখ। যার কাছে সমাজের সব স্তরের মানুষ সহজেই মনের সব কথা বলতে পারেন। বিপদে-আপদেসহ সব প্রয়োজনে তাকে পাশে পায়।
এভাবেই তিনি লাখ লাখ মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করে সংসদে এই জনপদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পাঁচবার। তিনি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। মুরাদনগরের সব সভ্যতা, ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে যার অস্তিত্ব।
গ্রামীণ অবকাঠামো থেকে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অবদান একমাত্র তারই। সেসময় তিনি মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর-শ্রীকাইল-নবীপুর সড়ক, ইলিয়টগঞ্জ-মুরাদনগর সড়ক, মুরাদনগর-হোমনা সড়কসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করেন।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার মসনদে বসার পর থেকেই একটি প্রভাবশালী মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। ২০১১ সালে এমপি থাকাকালীন সময়ে তিনি যখন অসুস্থ হয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসারত ছিলেন সে সময়ে তাকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মতো একটি স্পর্শকাতর মামলায় জড়িয়ে তাকে মুরাদনগর বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
তাকে দূরে রেখে মুরাদনগরের উন্নয়নকেই ব্যাহত করেনি, বঞ্চিত করেছে সাধারণ নিপীড়িত মানুষকে, অশ্রু ঝরিয়েছে তার লাখ লাখ ভক্তের। তবুও থেমে থাকেননি তিনি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন তার প্রিয় মুরাদনগরবাসীর সঙ্গে। সাধারণ মানুষের কোনো সমস্যার কথা শুনলেই দলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে নিজ উদ্যোগে নিপীড়িত মানুষের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করেছেন।
মুরাদনগরের উন্নয়নের রূপকার ও আধুনিক মুরাদনগরের স্থপতি কায়কোবাদ মুরাদনগরের সর্বস্তরের জনগণের অন্তরজুড়ে মিশে রয়েছেন। যাকে একনজর দেখার জন্য মুরাদনগরের মানুষ অধিক আগ্রহে শুধু অপেক্ষাই নয়, রীতিমতো পাগল প্রায় হয়ে আছেন। আবালবৃদ্ধবনিতা থেকে শুরু করে উপজেলাবাসীর একটাই দাবি- তাদের প্রিয় দাদাকে কাছে পাওয়া।
বলতে গেলে এটি এখন মুরাদনগরবাসীর একটি প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিনি মিথ্যা মামলার বেড়াজাল ছিন্ন করে মুরাদনগরের লাখো ভক্তের মাঝে ফিরে আসবেন- এটাই প্রত্যাশা সবার।
এদিকে দাদা কায়কোবাদ এ মাসেই (অক্টোবর) দেশে ফিরে মুরাদনগরে আসবেন বলে নিশ্চিত করেছে বিশ্বস্ত একটি সূত্র।
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে কায়কোবাদ প্রথমবারের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে মুরাদনগরে তিনি পুনরায় নির্বাচন হন। সে সময় আওয়ামী লীগ সরকারে থাকা অবস্থায় নির্বাচন হলেও এলাকায় তুমুল জনপ্রিয় কায়কোবাদ আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে আবারও এমপি নির্বাচিত হন।
তিনি এমপি হয়ে অবহেলিত মুরাদনগরকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করার মাধ্যমে উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ৩১৫টি গ্রামের উন্নয়ন করে এ উপজেলাকে একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন।
তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন যে, আর কোনো নির্বাচনে পরাজিত হতে হয়নি তাকে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ বলেন, এই জালিমদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার সন্তান তারেক রহমানসহ দেশের লাখ লাখ মানুষ।
তিনি বলেন, আমার অসুস্থ ছোট্ট ভাইটি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। তার বন্ধুর মৃত্যুর খবরে জানাজা দিতে যায় এলাকায়। জানাজার ময়দান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশবাহিনী। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আমি ১৩ বছর দেশে আসতে পারি না।
আমার মায়ের মৃত্যুর পর তার জানাজা ও দাফন আমি দিতে পারিনি। মাকে শেষ দেখাটাও দেখতে দেয়নি আমাকে। যারা দেশের মানুষের উপর জুলুম-অবিচার করেছে এই জুলুমকারীদের বিচার আল্লাহ চাইলে দেশের মাটিতে হবে ইনশাআল্লাহ বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন