বৃষ্টি না থাকায় শেরপুরে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে এখনো পানিবন্দি রয়েছে অনেক মানুষ। অন্যদিকে পানি কমতে শুরু করায় ভেসে উঠছে ক্ষতির চিহ্ন। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও সুপেয় পানির সংকট। চার দিনের বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) নকলার টালকী এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে রাহিম (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সে ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। এ নিয়ে জেলার বন্যায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১১ জনে। সর্বশেষ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান।
এর আগে সোমবার (৭ অক্টোবর) জেলার নালিতাবাড়ীর ঘোনাপাড়ায় জিমি আক্তার নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। বন্যার কারণে ওই শিশুসহ নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও নকলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
এদিকে বন্যাদুর্গত এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণসহ নানা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেও ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, পৌনে দুই লাখ কৃষকের প্রায় পঞ্চাশ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে এবারের বন্যায়। বন্যায় শেরপুরে ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা। তিন হাজার মাছের ঘের ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ত্রিশ কোটি টাকা। বন্যার কারণে জেলার ২৪২টি প্রাথমিক ও ৮৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন।
ঝিনাইগাতী উপজেলাতে পানি কমলেও, এখনো ঘরে পানি রয়েছে নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলাতে। স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও বিভিন্ন দপ্তর। তবে সব জায়গায় নৌকা না থাকায়, ত্রাণ সরবরাহে দেরি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১৩ বীরের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসান হাফিজুল হক বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করছি দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে। আমাদের এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘জেলার প্রায় সব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে। পানি কমতে শুরু করেছে, এতে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতি পরিমাণ ভেসে উঠছে।’
মন্তব্য করুন