শহীদ আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী আখ্যা ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে কটূক্তি করা বরখাস্ত হওয়া সেই লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে সচেতন নাগরিক সমাজের নেতারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তাপসী তাবাসসুম উর্মি বিভিন্নভাবে ছাত্রজনতার আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় নিমজ্জিত ছিলেন। তিনি আসলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছেন। এ সময় তারা বীর শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে মন্তব্য করা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে নিয়ে মন্তব্য করায় উর্মির বহিষ্কারের দাবি জানান। যদি দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা।
লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক ফোরামের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট ফিরোজ হায়দার লাবলু বলেন, একজন রাষ্ট্রের কর্মচারী হয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হওয়া উচিত। তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
লালমনিহাট জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে তাকে অবমুক্ত করে পাঠিয়ে দেই। তার ফেসবুক আইডিতে যে লেখা ছিল অত্যন্ত আপত্তিকর।
এর আগে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন তাপসী উর্মি। এজন্য তাকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। রোববার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নিলুফা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে সহকারী কমিশনার হিসেবে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বদলি করা হলো।
সোমবার (৭ অক্টোবর) ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে সরকার। একই সঙ্গে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মানুসর হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উর্মি তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।’
তবে কয়েক ঘণ্টা পর পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের পক্ষে বেশকিছু স্ট্যাটাস দেখা যায় তার টাইমলাইনে। আওয়ামী লীগের পক্ষে রয়েছে বেশকিছু পোস্ট।
মন্তব্য করুন