অপহৃত পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আরিফকে ফেরাতে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে দুর্বৃত্তরা। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় পেকুয়া সদরের ফায়ার সার্ভিসের সামনে থেকে অপহরণের শিকার হন তিনি।
এ ঘটনায় থানায় মামলা করে অধ্যক্ষের পরিবার; কিন্তু সাত দিন পার হলেও তার খোঁজ দিতে পারেনি পুলিশ। অধ্যক্ষ মো. আরিফকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে শনিবার (৫ অক্টোবর) জামাল খান প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।
অধ্যক্ষ আরিফের স্ত্রী মাহবুবা আনোয়ার লাইজুর দাবি, পুলিশের গাফিলতির কারণে স্বামীর খোঁজ সাত দিনেও মেলেনি। এ ঘটনায় তিনি প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন। লাইজু বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় পেকুয়া সদরের ফায়ার সার্ভিসের সামনে থেকে অজ্ঞাত ৮ থেকে ৯ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী জোরপূর্বক আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়।
ঘটনা জানাজানি হলে অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ১২টায় আমরা থানায় মামলা করি। পরদিন সকালে আমার স্বামীর মোবাইল থেকে অপহরণকারীরা ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। তারা টাকা নিয়ে চট্টগ্রামের ফ্রিপোর্ট এলাকায় যেতে বলে। সেখানে গেলে তারা আবার আমাকে নতুন ব্রিজ এলাকায় যেতে বলে; কিন্তু নতুন ব্রিজ এলাকায় গেলে তারা মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
এরপর ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় অপহরণকারীরা আবার ফোন করে মুক্তিপণের ৪০ লাখ টাকা দাবি করে। আমি নগদ পেমেন্টের সাহায্যে ৫০ হাজার টাকা পাঠাই। এরপর অপহরণকারীরা মোবাইল বন্ধ করে দেয়। মাঝে মাঝে ফোন চালু করে তারা মুক্তিপণ দিতে আমাদের চাপ দিচ্ছে। থানায় মামলা করার পরও আমরা প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।
আরিফের পরিবার জানায়, জায়গা-জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে আমাদের কোণঠাসা করতে এবং বিশাল অঙ্কের মুক্তিপণের টাকা আদায় করতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট দখলবাজ, চাঁদাবাজ একদল সন্ত্রাসী এই অপহরণটি ঘটিয়েছে।
মামলার বাদী মো. রিয়াজুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ঘটনার দিন রাত ৯টায় জনৈক নাছির উদ্দিনের সঙ্গে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ে সালিশের কথা ছিল। রাত সাড়ে ১২টায় আমার মেজো ভাইয়ের মোবাইল থেকে আমার মায়ের মোবাইলে কল করে কে বা কারা, তাদের কাছে আমার মেজো ভাই মোহাম্মদ আরিফ অপহৃত হয়েছে জানায়।
পরে আমার মেজো ভাবীর মোবাইলে ভাইয়ের ব্যবহৃত নম্বর থেকে কল করে দুপুর আড়াইটায় মুক্তির জন্য ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরদিন বিকেল ৪টায় টাকা নিয়ে চট্টগ্রাম নতুন ব্রিজ পুলিশ বক্সের সামনে যেতে বলে।
তারা আরও বলে, যেখানে বলি সেখানে যাবি, কোনো চালাকি অথবা পুলিশ, র্যাব কিংবা সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হবি না, দ্বারস্থ হলে তোর স্বামীর লাশ পাবি। এরপর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সিরাজুল মোস্তফা কালবেলাকে জানান, অধ্যক্ষকে উদ্ধারের চেষ্টায় আমাদের তিনটি টিম মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। তাকে উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
মন্তব্য করুন