সাভারের আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ মো. আব্দুল গফুর মিয়াসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক গায়েবি মামলার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (০৫ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. আব্দুল গফুর মিয়া। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অসংখ্য ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন, আর নৃশংস এ হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবার নিশ্চয়ই নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করতে পারেন। নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যরা দেশের আইন মেনে থানা কিংবা আদালতে মামলা করেছেন। এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। আমি নিজেও নারকীয় তাণ্ডবের মাধ্যমে এসব হত্যাযজ্ঞ যারা সংঘটিত করেছে তাদের বিচার চাই। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আশুলিয়া থানায় ওই সব মামলায় আমার নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিহত কিংবা আহত পরিবারের সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে একটি চক্র এহেন ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। সাভার ও আশুলিয়া থানায় আমার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমি ছাত্র-জনতার পাশে থেকেছি। অর্থনৈতিকভাবে এবং শারীরিকভাবে আমার দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলনের অংশ হয়েছিলাম। আমি আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। বিভিন্ন সময় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের গুণ্ডাপাণ্ডাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছি।
দীর্ঘ ১৬ বছর ঘরে ঘুমাতে পারিনি। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমার নামে ৩৬টি মামলা হয়েছে। আমার ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পারিবারিকভাবে আমাকে হতে হয়েছে হেনস্তার শিকার। আজ দেশ যখন দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে, মানুষ যেখানে কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে ঠিক এ সময়টিতে এসে আমার ও আমার দলের নেতাকর্মীদের নামে এসব মিথ্যা মামলা সত্যিই দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত। আমি মনে করি আমার দলের নেতাকর্মী এবং আমার বিরুদ্ধে যে সব মামলা হচ্ছে সেগুলোর মাধ্যমে আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে।
এসব মামলার মাধ্যমে সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমাদের আইনজীবীরা এসব মামলার আইনগত দিক পর্যালোচনা করছে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, সত্য এবং ন্যায়বিচার আমাদের পক্ষেই থাকবে।
আমরা গণমাধ্যম, ছাত্র সমন্বয়ক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দায়িত্বশীল নেতা ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, এসব ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও হয়রানি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে যারা প্রকৃত দোষী তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার।
এসব মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক কালবেলাকে বলেন, যে কেউ অভিযোগ বা মামলা করতেই পারে। এটা একজন নাগরিকের রাষ্ট্রীয় অধিকার। তবে যেসব মামলা ইতোপূর্বে হয়েছে বা হচ্ছে এসব মামলার যারাই আসামি হচ্ছেন কোনো রকম তদন্ত ছাড়া আমরা কাউকেই হয়রানি করছি না বা করব না। মামলা হলেই কাউকে কোনো রকম তদন্ত ছাড়া, উপযুক্ত তথ্যাদি ছাড়া, হয়রানি করা যাবে না, পুলিশের প্রতি এমন নির্দেশনাও রয়েছে। সুতরাং মামলা হলেই কাউকে তদন্ত ছাড়া গ্রেপ্তার কিংবা হয়রানি করা হবে না।
মন্তব্য করুন