ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় মামলা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মো. এমরান। ওই মামলায় নাম উল্লেখ করা ৯৬ জনের মধ্যে ২ জন আওয়ামী লীগ নেতা আগেই মারা গেছেন। মামলার নথি ঘেঁটে এবং স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। মৃত আসামিদের মধ্যে একজন আ.লীগ নেতা মো. মমিন। তিনি গত ২৪ জুন ভোরে হাঁটতে বেরিয়ে ট্রেনে কেটে মারা যান। তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। দায়ের করা মামলায় তাকে ৩৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মমিনের ছেলে মো. সাঈফ বলেন, আমার বাবা চলতি বছর ৪ জুন ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মামলার বিষয়টি এখনই জানলাম। আমার বাবা জুনে মারা গেছেন। তাকে কীভাবে ৪ আগস্টের হামলার ঘটনায় আসামি হলো? এ কেমন বর্বরতা। মামলায় আসামি করা আরেকজন মৃত আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান ফরিদ। তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি গত বছরের সেপ্টেম্বরে কিডনিজনিত সমস্যার কারণে মৃত্যুবরণ করেন। দায়ের করা মামলায় তাকে ৫৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান ফরিদের বড় ছেলে মো. ফরহাদ বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। তিনি কিডনিজনিত সমস্যায় মারা গেছেন। তার মৃত্যুর এক বছর পরের ঘটনার মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। এটা কেমন অবিচার? একজন মৃত মানুষ কী করে আসামি হতে পারেন? মামলার বাদী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুবির সমন্বয়ক মো. এমরান বলেন, মামলার অভিযোগ এবং অভিযুক্তদের নাম ঠিক আছে। আসামিদের নাম শনাক্তে কোনো ভুল আছে কি না আমরা খতিয়ে দেখছি। সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলার বাদী অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। পুলিশ তদন্ত করবে। মৃত কারও নাম পাওয়া গেলে তদন্তে তার নাম বাদ পড়বে। একটি ঘটনার বিষয়ে মামলা হলে সে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসে পুলিশের তদন্তে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব। প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মোবাইল তল্লাশি, হামলা, মারধর, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুবির সমন্বয়ক মো. এমরান। মামলায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয় সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোটভাই, সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার ও আবদুল হাই বাবলুকে।
মন্তব্য করুন