ঢাকার সাভারে প্রকাশ্য দিবালোকে আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে এক বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ওই বিএনপি নেতার স্ত্রী বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে সাভার পৌরসভার রাজাশন এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত ওই বিএনপি নেতার নাম মো. আলাউদ্দিন খান (৪৫)। তিনি সাভারের পূর্ব রাজাশন গির্জা রোড এলাকার বাসিন্দা এবং পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
আর অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- সাভার পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ মিয়া (৫০), সাভার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হাজী (৪৮), যুবলীগ নেতা মো. নজরুল (৫৫), মো. নাহিদ (৩৫), মো. সাদ্দাম (৩০), মো. আফসার (৩২), মো. তুষার ওরফে মনির (৩২), মো. ফারুক ওরফে স্বর্ণকার ফারুক (৫০), মো. শরীফ (৩২), মো. আহাদ (৩৩), মো. লাভলু (৩৫) ও মো. হৃদয় ওরফে কালা হৃদয় (৩৫)।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় ভুক্তভোগী মো. আলাউদ্দিনের সঙ্গে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. জাহিদ হাসানের ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হাজির দীর্ঘদিন যাবত রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল।
এর আগে গত ১১ জুলাই জাহিদ ও দেলোয়ার হাজীর নেতৃত্বে ভুক্তভোগীর বসতবাড়িতে হামলা চালানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে আজ দুপুর ১টার দিকে ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন রিকশাযোগে বাড়ি ফেরার সময় পথিমধ্যে অভিযুক্ত জাহিদ হাসানের অফিসের সামনে পৌঁছলে অভিযুক্তরা তার রিকশার গতিরোধ করে এবং তাকে টেনেহিঁচড়ে রিকশা থেকে নামিয়ে লোহার রড, বাঁশ ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে মার খেয়ে মাথা ফেটে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় জনতা ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী আলাউদ্দিনের ছেলে সাহাদাত হোসেন নীরব কালবেলাকে বলেন, আমার বাবা একজন বিএনপি নেতা। এ কারণে দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদ ও দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে আমার বাবার বিরোধ চলে আসছিল। সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমাদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেওয়ায় অভিযুক্তদের নেতৃত্বে আমাদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার আমার বাবার উপর হামলার চেষ্টা করে তারা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার থানায় আমরা অবগত করলেও কোনো বিচার পাইনি। আজকে তারা আমার বাবাকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি। আমি আমার বাবার উপরে এ হামলার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. জুয়েল মিঞা কালবেলাকে জানান, ভুক্তভোগীর স্ত্রী থানায় অভিযোগ করেছেন। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক তার কোনো ছাড় নেই।
মন্তব্য করুন