অন্যের পুকুরের ১০ লাখ টাকার মাছ তুলে নিয়ে বিক্রির পর এবার উল্টো সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মো. শহীদুল ইসলাম ও তার ভাই আব্দুর রশীদ।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তারা।
এ সময় ভুক্তভোগী জমির মালিক ইয়াহিয়াসহ অন্যদের নিয়ে বিষেদাগার করেন প্রভাবশালীরা। জোর করে জমি নেওয়ার পরে এখন আবার বিষোদগার শুরু করায় আতঙ্কে রয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদুল-রশীদ ছাড়াও ভাঙ্গুড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নুর মুজাহিদ স্বপন, খানমরিচ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তবে সেখানে পুকুরের কোনো মালিক উপস্থিত ছিলেন না।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে খানমরিচ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় এক যুগ ধরে পুকুরটির মালিকানা তাদের হয়েছে। অভিযোগকারী ইয়াহিয়া ও অন্য মালিকদের অংশ বিক্রি করে দিয়েছেন। তার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’ এ সময় স্থানীয় আদিবাসীদের জমিটিও নিজেদের দাবি করে শহীদুল বলেন, ‘তাদের পূর্বপুরুষ জমিটি কিনেছেন।’
শহিদুল আরও বলেন, ইয়াহিয়া বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতেই সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে তার সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে ‘১৭ বিঘার পুকুরে আব্দুর রশীদ ২ বিঘা ছাড়া কত বিঘার মালিক, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদুল ইসলামের ভাই আব্দুর রশীদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে বলতে পারছি না, দেখতে হবে।’ প্রশ্নের মুখে এ সময় স্বীকার করেন, পুকুরে থাকা দুজনের জমি এখনো তিনি কেনেননি। বাকি দুজনের ২ বিঘার জন্য ২ লাখের বেশি টাকা পরিশোধ করেছেন; কিন্তু তারা (ইয়াহিয়ার বোন) রেজিস্ট্রি করে দেয়নি। কিন্তু এত কম টাকায় ওই পরিমাণ জমি পাওয়া যায় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চুপ থাকেন আব্দুর রশীদ।
দীর্ঘদিন পুকুর চাষ করার পরও কেন সব জমির দলিল নিজের নামে নেই- এমন প্রশ্নেরও সদুত্তর মেলেনি রশীদের বক্তব্যে। ‘আদিবাসীদের জমি শহীদুল-রশিদের পূর্বপুরুষ কিনেছেন’ লিখিত বক্তব্যে দাবি করা ওই জমির পরিমাণ কত- এমন প্রশ্নের জবাবে রশীদ বলেন, এ মুহূর্তে জানা নেই; তবে জমিটির এসএ রেকর্ড-আরএস রেকর্ড তাদের নামে রয়েছে।
বিরোধপূর্ণ ওই পুকুর থেকে জোরপূর্বকভাবে মাছ তুলেছেন কিনা- এমন প্রশ্ন করলে এর সরাসরি উত্তর না দিয়ে অসংলগ্ন কথা বলেন আব্দুর রশীদ। এ সময় তিনি দাবি করেন, ১০-১২ বছর ধরে তিনিই পুকুরটি চাষ করছেন। ইয়াহিয়ার কোনো অংশ এখানে নেই।
প্রসঙ্গত, এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে ওই পুকুর থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ ধরেন শহিদুল ইসলাম ও আব্দুর রশীদ। যদিও ১৭ বিঘা আয়তনের এ পুকুরের জমির মালিক স্থানীয়রা। তবে এ পুকুরে স্বল্প পরিমাণ জমি রয়েছে শহিদুল ইসলাম ও আব্দুর রশীদের। কিন্তু স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাসীন হওয়ায় তারা এখন ভয়ভীতি দেখিয়ে পুকুর দখলে নিতে চাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
মন্তব্য করুন