ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে প্রায় ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করছেন শ্রমিকরা। বকেয়া বেতনসহ পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে তারা সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে এ অবস্থান নেন, যা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলমান রয়েছে। অবরোধের কারণে মহাসড়কটিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট।
মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় শ্রমিকদের সড়কে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়।
এতে সড়কের নবীনগর থেকে বাইপাইল হয়ে কবিরপুর পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে চন্দ্রামুখী সড়কে নবীনগর থেকে বাইপাইল পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার ও ঢাকামুখী লেনে কবিরপুর থেকে বাইপাইল ১০ কিলোমিটার সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
গত (৩০ সেপ্টেম্বর) সোমবার সকাল ৮টা থেকে মহাসড়কের বাইপাইল পয়েন্টে উভয় লেনে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শ্রমিকরা। গভীর রাতে বৃষ্টিতে ভিজে সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই মহাসড়কে কর্মব্যস্ততা বাড়তে থাকে। তবে সড়ক অবরোধের কারণে এ এলাকায় আসা পথচারী ও যানবাহনকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অবরোধের কারণে নবীনগর ত্রিমোড়কে কেন্দ্র করে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশাপাশি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও জট সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচামুখী সড়কে প্রায় নবীনগর থেকে সাভারের দিকে প্রায় ১০ কিমি ও ঢাকামুখী সড়কে নবীনগর থেকে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, বার্ডস গ্রুপের ৪টি কারখানা বার্ডস আর এন আর ফ্যাশন্স লিমিটেড, বার্ডস গার্মেন্টস, বার্ডস ফেডরেক্স, বার্ডস এ অ্যান্ড জেড লিমিটেড পাওনাদি পরিশোধ না করে বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর এসব কারখানার প্রায় ২ হাজার বিক্ষুদ্ধ শ্রমিক সড়ক অবরোধ করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বার্ডস গ্রুপের শ্রমিক বাবু বলেন, সোমবার আমাদের সমস্ত পাওনাদি পরিশোধ করার কথা ছিল। এর মধ্যে তারা নোটিশ টানিয়ে দেয়, পাওনা টাকা তিন মাস পর পরিশোধ করা হবে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে কীভাবে মালিকপক্ষ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়? শ্রমিকদের কোনো বেতন বাকি নেই, কিছু কর্মকর্তার থাকতে পারে। আমাদের সার্ভিস বেনিফিট, ছুটির টাকা, অন্যকোনো বকেয়া থাকলে সেগুলো দেওয়ার কথা ছিল।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে রানিং ফ্যাক্টরি লে-অফের নোটিশ দিয়ে বন্ধ করে দেয়। এক বছর ওপরে যাদের চাকরির বয়স তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, যাদের চাকরির বয়স এক বছরের কম তাদের কী কোনো ক্ষতি হয়নি।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, বার্ডস গ্রুপের কারখানাগুলো বাইপাইল বুড়ির বাজার এলাকায় অবস্থিত। এ কারখানাগুলো গত ২৮ আগস্ট থেকে লে-অফ ঘোষণা করে। পরে শ্রমিকরা এতে রাজি না হলে পরে কারখানা ১২৪ (ক) ধারায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
বার্ডস গ্রুপের শ্রমিকরা জানিয়েছে, শ্রমিকরা সকালে কারখানার সামনে এসে দেখেন, কারখানা ফটকে টাকা পরিশোধের সময়সীমা তিন মাস বৃদ্ধিসংক্রান্ত নোটিশ লাগিয়ে রেখেছে মালিকপক্ষ। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ নোটিশ জারি করে বার্ডস গ্রুপ।
সাভার হাইওয়ে থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, সোমবার থেকে বাইপাইলে একই অবস্থা। সড়কে যান চলাচল বন্ধ। কোনো বিকল্প ব্যবস্থাও নেই। অ্যাকশনে গেলেও তো অন্য সমস্যা। আমরা কি করতে পারি?
মন্তব্য করুন