চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের খাদেরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম ঢালীকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের দাবি, পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে তার লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ৯টায় খাদেরগাঁও ইউনিয়নের বেলুতী গ্রামের নিহতের বাড়ির পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত নজরুল ইসলাম ঢালী মতলবের খাদেরগাঁও ইউনিয়নের বেলুতী গ্রামের মৃত রুস্তম আলী ঢালীর ছেলে। তিনি খাদেরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন এবং এলাকায় ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাড়ি থেকে বের হন নজরুল ইসলাম ঢালী। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। বাড়িতে না আসায় রাত ১২টার সময় স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও ছেলে জামিউল ইসলাম তার মুঠোফোনে অনেকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি স্বজনরা।
তারা আরও জানান, মঙ্গলবার সকালে লোকজন নিহতের বাড়ির পাশে মো. আবুল হাসেম প্রধানীয়া নামে এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন ভবনের সিঁড়ির রডের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরিবারকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে যান এবং পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে ওই ব্যক্তির লাশের সুরতহাল তৈরি করে এবং লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
মো. নজরুল ইসলাম ঢালীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, রাজনৈতিক কারণে শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নজরুল ইসলাম ঢালীকে হত্যা করা হয়েছে। পরে লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে। যে ধরনের চিকন রশিতে লাশটির গলা ঝুলানো তা দিয়ে আত্মহত্যা সম্ভব নয়। লাশের পা মাটিতে লাগানো ছিল। এর পাশে তার জুতা, চশমা, গ্যাসলাইট ও দুটি মুঠোফোনের সেট পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, পরিবারের কারো সঙ্গেই তার মনোমালিন্য ছিল না। তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার। তবে সবকিছু পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।
মতলব দক্ষিণ থানার ওসি সালেহ আহম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
তিনি আরও বলেন, এটি একটি রহস্যজনক মৃত্যু। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরীসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
মন্তব্য করুন