মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের কিয়াম উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার (৩২)। আরব্য রজনির রূপকথাকে হার মানিয়েছে অনলাইন ক্যাসিনো সম্রাট আনোয়ার হোসেনের উত্থানের গল্প।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) কালবেলা অনলাইনে ‘দুবাই থেকে দেশে ফিরেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ক্যাসিনো আনোয়ার’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এরপর থেকেই বিভিন্নভাবে ক্যাসিনো আনোয়ার প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। যোগাযোগ করতে না পেরে প্রতিবেদকের ঘনিষ্ঠ একজনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। তিনি একটি আঞ্চলিক পত্রিকার প্রতিনিধি। এরপর রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত থেকেই ক্যাসিনো আনোয়ার তার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটিং করতে থাকে। এক পর্যায়ে হঠাৎ তার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দেয় নিউজ আটকানোর জন্য না শুধু কফি খাওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা বিকাশ করলাম। কেন যে মানুষ আমার শত্রু হয়। আমার এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেন আমার দ্বারা কোনো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সবাই উপকৃত হয়েছে।
উল্লেখ্য, কালবেলার অনলাইন ক্যাসিনো এজেন্টদের নিয়ে চলমান সিরিজে রোববার ক্যাসিনো আনোয়ার সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, একদিকে আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে চলছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের মানিলন্ডারিং অনুসন্ধান, অন্যদিকে দেশে ও বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে যাচ্ছেন বিকাশ কর্মী থেকে অনলাইন জুয়ার মাফিয়া এজেন্ট বনে যাওয়া এই আনোয়ার।
আনোয়ারের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের তদন্ত চলমান বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এবং মেহেরপুর জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট।
২০২২ সালে অনলাইন জুয়ায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গে আত্মগোপনে চলে যান আনোয়ার। এক সময় পাড়ি জমান দুবাইয়ে। কয়েক বছর যাবত সেখানে থেকেই চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ অনলাইন জুয়ার সাম্রাজ্য। বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে মাঝেমধ্যেই দেশে আসছেন, সম্পদ কিনছেন নিজের ও আত্মীয়-স্বজনের নামে, আবারও ফিরে যাচ্ছেন দুবাইয়ে। এভাবেই থেকে যাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মন্তব্য করুন