চলনবিলাঞ্চলে গত সোমবার থেকে চার দিনের টানা ভারি, মাঝারি ও টিপটিপ বৃষ্টির পানিতে প্রায় দেড় শতাধিক শুঁটকির চাতালে শুকাতে দেওয়া প্রায় আট লাখ টাকা মূল্যের শুঁটকি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আর বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিতে শুঁটকির আড়তদার বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার চলনবিলাঞ্চলে শুঁটকি তৈরির চাতালে মিঠা পানির দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছ যেমন- পুঁটি, চাঁন্দা, ইছা (ছোট চিংড়ি), খলিশা ট্যাংরা, টাঁকি, বোয়াল, শোলসহ ১০ থেকে ১২ প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি করা হয়ে থাকে। যা চাহিদা অনুযায়ী সৈয়দপুর, রংপুর, নীলফামারী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন শহরে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন শুঁটকি তৈরির আড়তদার বা ব্যবসায়ীরা।
আর গত চার দিনের বৃষ্টিতে চাতালে রোদে শুকানোর জন্য ছড়িয়ে রাখা দেড় শতাধিক চাতালে গড়ে প্রায় আট লাখ টাকার শুঁটকির মাছ বৃষ্টির কারণে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আধা শুকনা মাছগুলো দ্রুত চাতাল থেকে তুলে নেওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ অবশ্য গত বছরের চেয়ে কম হয়েছে আড়তদারদের। তারপরও চলনবিলাঞ্চলের চাতালে শুঁটকির জন্য শুকাতে দেওয়া মাছ পচে যায় বা ক্ষতি হয়েছে এটাও ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের জন্য খুব কম না।
এ দিকে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে একটু রোদের দেখা মেলায় শুঁটকি ব্যবসায়ীরা নতুন করে মাছ কিনে শুঁটকি চাতালগুলোতে শুঁটকি তৈরির কাজ ফের শুরু করেছেন বলে জানান, মহিষলুট এলাকার শুঁটকির আড়তদার মো. দেলোয়ার হোসেন, নানু মিয়া, আবু বক্কার সিদ্দিক।
তারা আরও জানান, গত চার দিনের থেমে থেমে ভারি, মাঝারি ও টিপটিপ বৃষ্টিপাতের কারণে দেশীয় মাছের শুঁটকি তৈরির ভরা মৌসুমে চলনবিলের নয় উপজেলার এলাকার বিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শুঁটকি আড়তদার বা ব্যবসায়ীদের বাঁশের বাতা ও খুঁটি দিয়ে তৈরি অস্থায়ীভাবে স্থাপনা করা শুঁটকির চাতালে শুকানোর জন্য ছড়িয়ে রাখা নানা প্রজাতির বেশির ভাগ মাছ পচে গেছে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, গত চার দিন চলনবিলাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এমনকি গতকাল শুক্রবারও ৬০ মি.লিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মশগুল আজাদ কালবেলাকে বলেন, বৃষ্টির কারণে শুঁটকির চাতালে শুকাতে দেওয়া কিছু পরিমাণ মাছ পচে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি নিরুপণে আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি তাদের জন্য কী করা যায় সে বিষয়টিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
মন্তব্য করুন