নওগাঁর পত্নীতলায় এক ব্যবসায়ীর ৮০০ আম গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর দাবি তিনি এক যুগ ধরে তার কেনা জমিতে আমবাগান করে ভোগ দখল করে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আমগাছগুলো কেটে ফেলে। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় বিচার চেয়েও হয়েছেন বঞ্চিত। তাই প্রতিকার পেতে বাধ্য হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।
শুক্রবার নওগাঁ শহরের ঐতিহ্যবাহী প্যারীমোহন সাধারণ গ্রন্থাগারে সংবাদ সম্মেলন করে ন্যায়বিচারের দাবি জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আলহাজ মো. আবুল হোসেন (৫০)। তিনি ঢাকার সাভার জালেম্বর মহল্লার নিরাজ উদ্দীন দেওয়ানের ছেলে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়ান এন্টারপ্রাইজ।
লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, আমি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার সুবাদে পত্নীতলা উপজেলার ব্যবসায়ী আনিছুর মোল্লা আমার বন্ধু। তার মাধ্যমে প্রায় ১২ বছর আগে উপজেলার ঘোষপাড়া গ্রামের মৃত গোপেন্দ্র নাথ ঘোষের ছেলে গৌতম ঘোষ ও মেয়ে মিতালী রাণী ঘোষের কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকায় ৪ দশমিক ৩২ একর জমি ক্রয় করি। এরপর সেই জমিটিতে একটি বাগান করে স্থানীয় বর্গাদার আব্দুস সামাদের মাধ্যমে সেখানে ১২০০ বারি-৪ জাতের আমগাছ রোপণ করে ভোগদখল করে আসছিলাম। এমনকি সেখান থেকে প্রতি বছর আনুমানিক ১০ লাখ টাকার আম বিক্রয় করতাম। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু ব্যক্তি আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তি তাদের দাবি করে বিভিন্ন ঝামেলা করছিল। বিষয়টি নিয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পত্মীতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৯ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পূর্ব পাটিচোরা গ্রামের নাইম হোসেন এবং তার দুই ভাই লেমন হোসেন ও ছেলিম হোসেনসহ অজ্ঞাত আর ২০-২৫ জন যুবক হাতে হাঁসুয়া, দা, কুড়াল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার বাগানে প্রবেশ করে। এরপর তারা বাগানের ৮০০ এরও বেশি আম গাছ কেটে ফেলে। এতে আমার প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আবুল হোসেনের ছেলে শফিউল্লাহ দেওয়ান ও ভাতিজা কাজি শোভন শাহরিয়ার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাইম হোসেন ফোনে কালবেলাকে বলেন, আমরা ১৯৮৮ সালে সরকারের কাছে আবেদন করি। এর প্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালে সরকার আমাদের তিনজনকে তিন একর জমি পত্তন দেয়। খারিজ ও পত্তন মূলে আমাদের নামে হোল্ডিং আছে। আবুল হোসেনের জমির ১০১৮ দাগে আমরা যাইনি। আমাদের ৯০৭ দাগে যে জমি আছে সেই জমিতে আছি। তাই আমরা তো দখল নিবই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জমির কাগজগুলো দেখাতে যে কোনো সময় রাজি আছি। যেহেতু বিবাদ চলছে আমরাও থানায় বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওনি না বসে তালবাহানা করছে। এ ছাড়া তারা হয়রানি করার জন্য গাছকাটার অভিযোগ তুলছে। আর এতদিন স্থানীয়দের হয়রানির কারণে যেতে পারিনি বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় পত্নীতলা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ এনায়েতুর রহমান জানান, আমবাগানের মালিকানার সমস্যা নিয়ে আবুল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ করেছিলেন অনেকদিন আগে। তবে কয়েক দিন থানায় এসে তিনি জানান তার বাগানের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। তারপর পুলিশকে পাঠিয়ে সেটা বন্ধ করা হয়।
মন্তব্য করুন