চট্টগ্রামের রাউজানে দুই ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে মারধরের পর মৃত ভেবে নদীর চরে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কচুখাইন গ্রামের বাঁধের মুখের চর থেকে হাত, পা-মুখ বাঁধা অবস্থায় তাদের উদ্ধার করা হয়।
এর আগে আজ সকাল ১১টায় নায়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা।
তারা হলেন- উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন (৩২) ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন (৩০)। জয়নালের বাড়ি নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিশপাড়া এবং সাজ্জাদের বাড়ি কচুখাইন গ্রামে।
মূলত রাজনৈতিক কারণে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন বিএনপির নেতারা। তারা দুজন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তাদের অপহরণ করে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জয়নাল আবেদীন সোহেল কালবেলাকে জানান, আজ সকাল ১১টায় নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান তিনি। সেখানে ১০ থেকে ১৫ জন ছেলে অস্ত্র-সস্ত্রসহ তাকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি খন্দকার গ্রুপ করেন কেন? সেই গ্রুপ না করে তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি এতে রাজি না হওয়ায় দেওয়া হয় গুলি করার হুমকি। এরপর অপহরণকারীরা হামলা চালিয়ে ফাটিয়ে দেন মাথা। পরে সাড়ে ১১টার দিকে চৌধুরী ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের, সেখানে বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের, তার ছেলে সামির এবং দুবাইয়ের মাফিয়া ডন জসিমের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন অপহরণকারীরা। তারা সবাই নির্দেশ দেন গুলি করার।
জয়নাল আবেদীন সোহেল কালবেলাকে বলেন, আমাদের গ্রুপের লোকজন আমাদের খোঁজা শুরু করে দেয়। তখন তারা আমাদের চোখ, মুখ, হাত-পা বেঁধে একটি নৌকায় তুলে দেয়। ওই মাঝি আমাদের একটি চরে নিয়ে ফেলে রাখে। এরপর আমাদের কখন উদ্ধার করা হয়েছে তাও জানি না। আমার সঙ্গে তাদের কোনো পূর্বশত্রুতা ছিল না। আমি এ ঘটনায় অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেব।
আহত ছাত্রদল নেতা মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের বাবা শওকত হোসেন বলেন, অপহরণকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মুক্তিপণ চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় পিটিয়ে জখম করে মেরে ফেলতে চেয়েছিল।
রাউজান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ছাত্রদলের দুই নেতাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নেতার নির্দেশে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়েছে। এই হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
রাউজান থানার ওসি মীর মাহবুবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, অপহরণ নয়, দলীয় গ্রুপিংয়ের ফলে মারধর করা হয়েছে দুই ছাত্রদল নেতাকে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
মন্তব্য করুন