গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ব্যাগ তৈরি করে ভাগ্য খুলেছে গৃহবধূ সাজিনার

নিজের কারখানায় তৈরি ব্যাগ হাতে গৃহবধূ সাজিনা। ছবি : কালবেলা
নিজের কারখানায় তৈরি ব্যাগ হাতে গৃহবধূ সাজিনা। ছবি : কালবেলা

বাজারের ব্যাগ তৈরি করে ভাগ্য খুলেছে গৃহবধূ সাজিনার (২৮)। নিজের সঙ্গে স্বাবলম্বী করেছেন গ্রামের পাঁচ শতাধিক অবহেলিত নারীকেও। হাঁস বিক্রির মাত্র ১৬০০ টাকা দিয়ে পুঁজিতে শুরু করা এ ব্যবসা থেকে এখন প্রতিমাসে প্রায় অর্ধ লাখ টাকা আয় করছেন গৃহবধূ সাজিনা বেগম।

জানা যায়, ২০০৮ সালে পলাশবাড়ির বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর ডিলারপাড়া গ্রামের মোনারুলের (৩৫) সঙ্গে বিয়ে হয় সাজিনা বেগমের। তবে বিয়ের পর থেকে আর্থিক টানাপড়েন ছিল তার নিত্যসঙ্গী। হঠাৎ একদিন পাশের গ্রামে ব্যাগ তৈরি দেখে তিনিও সিদ্ধান্ত নেন এ কাজ করার। যেমন চিন্তা, তেমন কাজ। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডে (বিআরডিবি) প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করেন এই গৃহবধূ। ঘরে মাত্র ১৬০০ টাকা দিয়ে শুরু করলেও পরে ঋণ নিয়ে কাজের পরিধি আরও বাড়াতে থাকেন। সেই থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি গাইবান্ধার উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর ডিলার পাড়ার গ্রামের গৃহবধূ সাজিনাকে।

পর্যায়ক্রমে ব্যাগের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গ্রামের অন্যান্য নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যাগ তৈরির কাজে নিযুক্ত করেন। এক পর্যায়ে ব্যাগ তৈরির কারখানা দেন সাজিনা। আর এ কাজে সবসময় পাশে ছিলেন স্বামী মোনারুল। সাজিনার এমন সফলতা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এলাকায়। গ্রামটি এখন অনেকের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে ব্যাগের গ্রাম নামে। গ্রামে অন্য নারীদের কাছে তিনি অনুকরণীয় বলে জানান স্থানীয়রা।

তৈরিকৃত এসব ব্যাগ শুধু নিজ জেলায় না রংপুর, বগুড়ায়, হিলি, সৈয়দপুর, পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। তবে ব্যাগের চাহিদা বেশি থাকলেও পুঁজি কম হওয়ায় আশানূরুপ উৎপাদন করতে পারছেন না সাবিনা। তাই সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে আরও বড় পরিসরে ব্যাগ তৈরি করে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।

সাজিনার স্বামীর মো. মোনারুল কালবেলাকে বলেন, শুধু আমি নয় এলাকার সবাই এখন সাবিনাকে নিয়ে গর্ব করে। তার কাছে অসহায় নারী আসলে কখনো ফিরে যায় না। সে একজন প্রতিবন্ধী মেয়েকেও কাজ দিয়েছেন। তার এই কাজে আমরা পরিবারের লোকজন খুব খুশি।

কারখানার শ্রমিক রাজু মিয়া বলেন, গ্রামের একজন পুরুষ যা পারেনি সাজিনা আপা সেটি পেরেছেন। গ্রামে অসহায় নারী, প্রতিবন্ধী এমনকি আমি নিজেও কাজ করে এখন আয় করছি।

আরেকজন নারী শ্রমিক সাজুনী আক্তার বলেন, আপার জন্য আমি এখন সংসার চালাতে পারি। দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করছি। স্বামীর কাছ থেকে আর টাকা নিতে হয় না। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ এখন আমিই বহন করি।

এসব বিষয়ে সাবিনা কালবেলাকে বলেন, ব্যাগের চাহিদা বেশি থাকলেও পুঁজি কম হওয়ায় আশানূরুপ উৎপাদন করতে পারছি না। তাই সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে আরও বড় পরিসরে কারখানা দিতে পারব। উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।

সাজিনার এ ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন পলাশবাড়ী উপজেলা বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়নের (বিআরডিবি) সহকারী কর্মকর্তা মো. ফিরোজ কবীর।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রবাসীদের সমস্যা সবার আগে সমাধান করতে হবে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সঠিক সমালোচনার জবাবদিহি করব, কিন্তু গুজব ছড়াবেন না : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা : বাংলাদেশের বক্তব্য নিয়ে ভারতের বিবৃতি

কাফনের কাপড় পড়ে কারিগরি শিক্ষার্থীদের মিছিল

২৬ বিশ্বকাপে খেলার ব্যাপারে যা বললেন মেসি

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপের আহ্বান

সিরাজগঞ্জে তিন বছরের শিশু ধর্ষণচেষ্টায় মামলা

রাজধানীতে চাপাতি ঠেকিয়ে ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১

নারায়ণগঞ্জে যুবককে গুলি করে হত্যা, আসামি গ্রেপ্তার

যুদ্ধবিরতিতে ফিলিস্তিনিদের ‘না’, প্রস্তাবে যা বলেছে ইসরায়েল

১০

মায়ামিতে যাওয়ার আগে বার্সায় ফিরতে চেয়েছিলেন মেসি

১১

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশি নিহত

১২

নোয়াখালীতে পুড়ল ২০ দোকান

১৩

ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে কে কার মুখোমুখি?

১৪

চেকপোস্ট ব্যারাক থেকে পুলিশ কনস্টেবলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

১৫

তিন ছেলের ফুটবল জ্ঞান সম্পর্কে যা বললেন মেসি

১৬

শেষ পর্যন্ত বিটিভিতে রক্ষা বিসিবির

১৭

শিশুসন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা

১৮

বৃদ্ধকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

১৯

টাঙ্গাইলের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি ফেনীতে গ্রেপ্তার

২০
X