যশোরের অভয়নগরে নিখোঁজ হওয়ার ৩৩ ঘণ্টা পর প্রতিবেশীর সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতর থেকে সবিতা রানী দে (৪৮) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের দেবপাড়া এলাকার রাজমিস্ত্রি নিয়ামুল ইসলামের শৌচাগারের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে গত সোমবার সকালে গরুর খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। সবিতা রানী দে উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের দেবপাড়া এলাকার মিলন কুমার দে’র স্ত্রী ছিলেন। মিলন পেশায় একজন চা বিক্রেতা। ভাটপাড়া বাজারে তার দোকান রয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ একই এলাকার আজিত মোড়লের দুই ছেলে রমজান (৩৭) ও ইউনুসকে (৪২) আটক করেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ইউনুসের পোলট্রি ফার্মের শেয়াল-কুকুরের ফাঁদের জন্য দেওয়া হয় বিদ্যুৎ। ওই দিন সোমবার সকালে দোকানে যাওয়ার সময় সবিতা গরুর খাবার সংগ্রহ করতে বাড়ির পাশের একটি বাঁশবাগানের দিকে চলে যান।
পরে ইউনুসের পোলট্রি ফার্মে সবিতা বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান। এ সময় রমজান ও ইউনুস তাদের পোলট্রি ফার্মের পাশে লাশ দেখতে পান। ভয়ে তারা লাশ নিয়ে সেফটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেয়।
এ ব্যাপারে সবিতার স্বামী মিলন কুমার দে বলেন, দুপুরে ফোন করলে সবিতার ফোন বন্ধ পাই। দ্রুত বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পাই। এ সময় প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। পোলট্রি ফার্মের মালিকইউনুছ ও তার ভাই রমজান সেফটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় আমার স্ত্রীকে। পরে থানায় গিয়ে নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছি। তাদের পুলিশ আটক করেছে।
সবিতা রানীর দুই মেয়ে শুক্লা দে ও বৈশাখী দে বলেন, আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতরে গুম করার উদ্দেশ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই কাজের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।
এদিকে, বিদ্যুৎস্পর্শের কারণে যদি সবিতা রানী দে’র মৃত্যু হয়ে থাকে, তবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে অভয়নগর থানার ওসি এসএম আকিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মিলন কুমার দে একটি মামলা করেছেন এবং একই এলাকার দুই ভাইকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।
মন্তব্য করুন