যশোরে শাশুড়িকে হত্যার দায়ে জামাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল আজিজ যশোর সদর উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের মৃত মকছেদ মোল্লার ছেলে। নিহত ছায়েরা খাতুন একই গ্রামের মহিউদ্দিনের স্ত্রী।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (অতিরিক্ত পিপি) ভীম সেন দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল আজিজের ছেলের সঙ্গে নিহত ছায়েরার মেয়ে ইয়াসমিনের বিয়ের কথাবার্তা হয়। এর মধ্যে আজিজ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজেই ইয়াসমিনকে বিয়ে করে। ফলে মেনে নেয়নি ইয়াসমিনের পরিবার। একপর্যায়ে হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে মেনে নিতে বাধ্য করে।
এরপর থেকে আজিজ ইয়াসমিনদের বাড়িতে অবস্থান করে। কয়েক দিন পর ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার কথা বলে শাশুড়ি ছায়েরা বেগমের কাছে জমির দলিল ও পর্চা চায়। কিন্তু ছায়রা দিতে রাজি হন না। এ নিয়ে প্রকাশ্যে হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি দেয় আজিজ।
সর্বশেষ ২০১০ সালের ১৯ জুলাই রাতে ঘরের ভেতরে ঘুমাতে যান জেসমিন ও আজিজ। অন্যদিকে বারান্দার খাটে ঘুমান ছায়রা বেগম ও তার স্বামী। মধ্যরাতে আজিজ বাইরে বের হয়ে ছায়রাকে ডেকে নেয়। এরপর রান্নাঘরের পেছনে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ছায়রার গলায় গামছা পেঁচিয়ে পাশের একটি আমগাছের ডালে লাশ ঝুলিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে সবার কাছে প্রচার করা হয় ছায়রা আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ছায়রার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উঠে আসে ছায়রাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার এক মাস পর ২৪ আগস্ট ছায়রার ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তে উঠে আসে জমির দলিল না দেওয়ার ক্ষোভে শাশুড়িকে হত্যা করেছে আজিজ।
তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার তৎকালীন এসআই ওহেদুজ্জামান আব্দুল আজিজকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। আজিজ পলাতক থাকায় বিচারক তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মন্তব্য করুন