নিম্নচাপের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে চলতি মাসে ফের পদ্মা নদীতে পানি বেড়েছে। পাঁচ-ছয় দিন ধরে পানি বাড়ায় আতঙ্কিত কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মাপাড়ের মানুষ।
এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে কমতে শুরু করে। তবে ফের পানি বাড়ায় বন্যার আশঙ্কায় রয়েছেন নদীঘেঁষা উপজেলার চার ইউনিয়নে বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে চরের বেশ কিছু আবাদি জমির কালাইসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
তবে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগ বলছে, আর এক দিন পানি বৃদ্ধি পাবে, পরে তা স্থিতিশীল থেকে আবার কমতে শুরু করবে। এতে বন্যা হওয়ার কোনো আশঙ্কা দেখছে না তারা।
তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত এখানে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার নিচে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।
উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, মরিচা ও ফিলিপনগর- এই চার ইউনিয়নের পদ্মাপারের মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বন্যায়, ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়েছে চরের আবাদি ফসলের মাঠ। এর মধ্যে পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় তীরবর্তী মানুষ অসময়ে বন্যার আশঙ্কা করছেন।
উপজেলার চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, নদীর পানি আবার বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে তা লোকালয়ে এখনো প্রবেশ করেনি। কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকেছে। প্রায় ১০০ একরের মতো কালাই ডুবে গেছে। অনেক কৃষক পেঁয়াজ চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছিল।
রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল বলেন, নদীতে পানি কমে গিয়ে আবার বাড়তে শুরু করেছে, তবে ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়নি।
চরে প্লাবিত হওয়া কৃষিজমির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের বিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে চার ইউনিয়নের অন্তত ৩২ হেক্টর জমির কালাই ডুবে গেছে। এবার চরে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে কালাই চাষ হয়েছে।
পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে আজ সকালে ৯টা পর্যন্ত পানির প্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার; যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার নিচে। তবে এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।
মন্তব্য করুন