আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশ চলছিল। শিডিউল অনুসারে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তারপর গান গাওয়ার এক পর্যায়ে শেখ হাসিনার নামে গান ধরেন শিল্পীরা।
বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
এমন কাণ্ডের পর সমালোচনার মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম নগরের জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) শীর্ষ নেতারা। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামীপন্থি শিল্পীরা জাসাসের ব্যানারে এসব করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপির সমাবেশ শুরুর আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাসাস। এতে কয়েকজন শিল্পীর দেশাত্মবোধক গান গাওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে মঞ্চে ওঠেন শিল্পী মৌমনি ও ওমর আলি রনি। গান গাইতে গাইতে ভুলে তারা হাসিনার নামে গানের সুর তোলেন। পরপর দুবার এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সভাস্থলে।
এরপর মূলত নগর জাসাসের আহ্বায়ক এমএ মুছা বাবলকে ঘিরে অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীপন্থি কিছু শিল্পীকে প্রশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। এর আগে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে চট্টগ্রামে আওয়ামীপন্থি সংগঠন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতা শেখ নজরুল ইসলামের ‘মাইজভান্ডারি দর্শন’ গানের শিডিউল ধারণ অনুষ্ঠানে গিয়ে বির্তকের জন্ম দেন বাবলু। সবশেষ গত ৭ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় জাসাস থেকে শোকজ করা হয় বাবলুকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা কালবেলাকে বলেন, হাসিনার নামে গান ধরেছেন, বিষয়টি তেমন না। তারা একটি গান গাইছিল, যেখানে এক লাইনে খালেদা জিয়ার নাম ছিল। কিন্তু তারা ভুলে শেখ হাসিনার নামে সুর তোলে। ওই শিল্পীরা জাসাসের শিল্পী পরিচয়ে অনুষ্ঠানে এসেছিল।
এরই মধ্যে শিল্পী ওমর আলী রনির সঙ্গে নগর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরীসহ বেশ কয়েকটি ছবি কালবেলার হাতে এসেছে। তবে রনিকে বিএনপিপন্থি শিল্পী বলে দাবি করেছেন নগর জাসাসের আহ্বায়ক বাবলু।
এমএ মুছা বাবলু কালবেলাকে বলেন, মঞ্চে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না আমার জানা নেই। জেনে জানাতে হবে। আমি মঞ্চের নিচে ছিলাম। আপনি যে দুজন শিল্পীর নাম বলছেন তার মধ্যে আমি একজনকে চিনি না। তবে রনির ব্যাপারে আমি বলতে পারব। সে তার এলাকায় বিএনপির একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কিন্তু জাসাসের সদস্য নয়।
অন্যদিকে বিষয়টি জানতে কল করা হলে প্রশ্ন শুনে মোবাইল ফোনের কল কেটে দেন নগর জাসাসের সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ সিপন।
কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে কি না খেয়াল করিনি। যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে অবশ্যই তদন্ত হবে। নতুন একটি প্রেক্ষাপট সৃষ্টির পর অনেকেই অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কিন্তু যেখানেই যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন