সুন্দর ঔষধি বাগানের চারপাশে উঁচু উঁচু ভবনে ঘেরা পরিবেশটা যে কারও নজর কেড়ে নেয়। এর ভেতরে বিভিন্ন অফিসারদের থাকার জন্য চমকপ্রদ ডরমিটরিগুলোর মতোই নতুন ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি। হাসপাতালের ভেতরে সুন্দর সুন্দর বিছানাগুলো আয়নার দরজা দিয়ে জাদুঘরের মতো প্রদর্শন করা হচ্ছে।
গত তিন বছর আগে ৩১ থেকে ৫০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীতকরণ হয় নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজটি বাস্তবায়ন করেন। ২০২১ সালে ৭ নভেম্বর সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ৫০ শয্যা হাসপাতালের উদ্বোধন করলেও এখন পর্যন্ত নতুন ভবনে রোগী স্থানান্তরিত করা হয়নি। এতে ভোগান্তিতে আছে উপজেলার ২ লাখ মানুষ। নতুন ভবনটি ইতোমধ্যে রং উঠে পুরাতনের আকৃতি ধারণ করেছে। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়ার অভাবে তিনতলা ফ্লোরটি চালু করতে পারছে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে রোগীর পরিমাণ এত বেশি যে মেঝেতেও জায়গা হচ্ছে না। ডায়রিয়া রোগীদের আলাদা স্থানে রাখার নিয়ম থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে অন্যান্য সাধারণ রোগীদের সঙ্গে মেঝেতেই জায়গা করে দিয়েছে কর্তব্যরত সেবিকারা।
হাসপাতালের খাবারের মান নিয়ে বিভিন্ন রোগীদের অভিযোগ থাকলেও আমলে নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে ওষুধের সরবরাহ তুলনামূলক কম থাকায় গরিব রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে না।
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বহিঃবিভাগে রোগীদের সেবার মান আর বাহিরে ডায়াগনস্টিকে বসে চিকিৎসা দেওয়ার মান ভিন্ন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। বারহাট্টা হাসপাতালে রোগীর ভিড়ে ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিদের ভিড় রোগীদের দিশেহারা করে ফেলে।
৫০ শয্যা হাসপাতালে ভালো ভালো বিছানা থাকতে রোগীদের মেঝেতে নোংরা বিছানায় কেন রাখছেন। কবে নতুন ভবনে রোগীদের স্থানান্তরিত করা হবে এমন প্রশ্ন করলে, বারহাট্টা হাসপাতাল প্রধান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসলেই রোগীর অনেক চাপ। তাই মেঝেতে জায়গা দিতে হচ্ছে। তিন তলাটি ৪ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী হলে চালু করা যেতো। দুজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও দুজন আয়ার অভাবে তিন তলাটি চালু করতে পারছি না। পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে ক্লিনার আয়া নিয়োগ হয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে আমাদের বারহাট্টা উপজেলার নিয়োগটি হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
নেত্রকোনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টাচার্য কালবেলাকে বলেন, জনবলের কারণে ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না। হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়া সংকট রয়েছে। বারহাট্টা হাসপাতালে ৩১ থেকে ৫০ করতে কিছু পদ সৃজল করতে হবে। এটি একটু সময় সাপেক্ষ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে একটি আউটসোর্সিং অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন হয়ে আসলে আমরা টেন্ডার দিবো। এর পর কিছুটা সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।
মন্তব্য করুন