কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর ৮৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী বৃদ্ধের পাশে দাঁড়িয়েছে রূপায়ণ গ্রুপ। মাছ রাখার ছোড়কা বিক্রি ও ভিক্ষা করে সংসার চালানো বেগম মিয়াকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন রূপায়ণ গ্রুপের কর্ণধাররা।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রূপায়ণ গ্রুপের রাব্বি নামে এক কর্মকর্তা কালবেলা প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, বেগম মিয়াকে রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করতে।
পরে রোববার বেলা ১১টায় নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা আসমা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের কাদা রাস্তায় পৌঁছে বেগম মিয়ার বাড়িতে গিয়ে আবেদন ফরমটি পূরণ করে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবেদনের ফরমটি রূপায়ণ গ্রুপ থেকেই পাঠানো হয়েছিল। তাদের কথা অনুযায়ী আবেদন ফরমটিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি জোর সুপারিশ সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ‘ভাত তারা দিতে চায়, আমি খাই না’ শিরোনামে কালবেলা একটি সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদটি পড়ে ঢাকা থেকে রূপায়ণ গ্রুপের কর্ণধাররা বেগম মিয়াকে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করেন।
রূপায়ণ গ্রুপের ওই কর্মকর্তা রাব্বি বলেন, ৮৫ বছর বয়সের একটি লোক এখনো এত পরিশ্রম করেন, এটা বড় কষ্টের বিষয়। আমাদের কোম্পানি এই প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তাই টাকা গ্রহণের মাধ্যম হিসেবে বৃদ্ধ বেগম মিয়ার ছোট ছেলে আ. হালিমের নগদের অ্যাকাউন্ট নম্বর রূপায়ণ গ্রুপে দেওয়া হয়েছে।
কালবেলায় প্রকাশিত সংবাদটির কিছু অংশ এমন ছিল- বৃদ্ধ আবেগাপ্লুত হয়ে নিজের ছেলেদের ব্যাপারে বলেন, ‘আমার সেলিম, হেলিম, হালিম নামে তিন ছেলে আর পাঁচটি মেয়ে আছে। একেকজন চার থেকে পাঁচজনের বাপ হয়েছে। আমি ছোট ছেলের সঙ্গে থাকি। অন্যরা আমাকে ভাত দেয় না। তারা বলে, আমার নিজের বাড়ি থেকে গিয়ে দূরে অবস্থিত তাদের বাড়িতে খেয়ে আসতে। আমার পেটে যখন ক্ষুধা লাগে তখন আমার বৌয়েরা বলে এখনো ভাত হয়নি, আরেকটু পরে আসেন। আমি তাদের ভাতের আশা আর করি না। আমি মরলে আপনারা আমাকে মাটি দেবেন, তাহলেই হবে। আমি যে জায়গায় থাকি, ইচ্ছে করলে ছেলেরা বৌদের না জানিয়ে আমাকে কিছু খরচাপাতি দিতে পারে। কিন্তু দেওয়ার নিয়ত না থাকলে কেমনে দেবে। আপনাকে কী বলব বাবা, এরা আমাকে ঈদের মধ্যে একটা লুঙ্গিও দেয় না।’
বেগম মিয়ার বাড়িতে যাওয়ার সময় দৈনিক দেশ রূপান্তরের জেলা প্রতিনিধি কামাল মণ্ডল, দৈনিক মানবজমিনের প্রতিনিধি মামুন কৌশিক, আসমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম খান চন্দু ও পরিষদের মেম্বাররা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন