টাঙ্গাইলের বেসরকারি এনজিও সংস্থা সেতুর হিসাবরক্ষককে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ৫ জনকে আসামি করে নিহতের মা সুফিয়া বেগম একটি মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মির্জা সাকিব, রফিকুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম ও খায়রুল হাসান।
জানা যায়, শুক্রবার মধ্যরাতে তাকে হত্যা করার পর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। এতে স্বজনদের বলা হয় হাসান অসুস্থ হাসপাতালে রয়েছে।
এর আগে গত (১৬ সেপ্টেম্বর) সোমবার আঠার লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হাসানসহ দুইজনকে কর্তৃপক্ষ আটক রাখে বলেও জানান স্বজনরা।
নিহত হাসান (৩৫) বেসরকারি এনজিও সংস্থা সেতুর জামালপুর শাখার হিসাব রক্ষক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার পুটিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।
স্বজনদের অভিযোগ, গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সংস্থার ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে কর্তৃপক্ষ শাখা হিসাব রক্ষক হাসান ও এরিয়া ম্যানেজার লিটনকে ধরে এনে একটি বদ্ধ ঘরে আটকে রাখাসহ নির্যাতন চালায়। টাকা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানানো হলে মিমাংসার জন্য তিনদিনের সময় নেন তারা। হঠাৎ শুক্রবার রাতে সংস্থা থেকে জানানো হয় হাসান অসুস্থ ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
পরবর্তীতে রাতেই টাঙ্গাইল সদর থানা থেকে জানানো হয় হাসান মৃত্যুবরণ করেছে।
নিহতের মা সুফিয়া খাতুন বলেন, আমার ছেলে হাসান গত পাঁচ বছর যাবৎ এনজিওতে চাকরি করে। গত ছয় মাস যাবৎ জামালপুর শাখার দুই কর্মী সঙ্গে তার ঝামেলা চলছিল। গত সোমবার কর্তৃপক্ষ হাসানকে জামালপুর থেকে ধরে আনেন। এরপর তার মোবাইল কেরে নেয় ও তাকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না। খবর পেয়ে বুধবার আমরা হাসানকে দেখতে আসলে তার সঙ্গে আমাদের কথা বলতে দেয়নি এবং আমাদের সামনেই তাকে বকাবকি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১২টায় এনজিওর লোক আমাকে ফোন দিয়ে জানায় হাসান অসুস্থ ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে রাতেই আবার থানার ডিউটি অফিসার ফোন দিয়ে জানায় আমার ছেলে হাসান মারা গেছে। আমার ছেলে উনারা হত্যা করেছেন। আমি সন্তান হত্যার বিচার দাবি করছি।
বেসরকারি এনজিও সংস্থা সেতুর নির্বাহী পরিচালক মির্জা শাহাদত হোসেন বলেন, হাসানের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানভীর আহমেদ কালবেলাকে জানান, এ ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে বিকেলে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এরপর তাৎক্ষণিক আমরা ৫জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান।
মন্তব্য করুন