সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ভেঙে যাওয়া বেত্রবতী নদীর সেতু তৃতীয় দিনেও সচল হয়নি। এতে কলারোয়ার সঙ্গে পৌরসভাসহ উপজেলার উভয়পাশের ১২ ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ নদী পারাপারে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ মোকাবিলা করছেন।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন দেখা যায়, পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বেত্রবতী বেইলি ব্রিজের পূর্বপাশ দেবে গিয়ে নদীর সঙ্গে মিশে গেছে। লোহার ওই বেইলি ব্রিজের পূর্বপাশের ওপর দিয়ে ৩-৪ ফুট উচ্চতায় পানির স্রোত বয়ে যাচ্ছে।
ব্রিজের ওই অংশের সংযোগসড়কের মাটির ভাঙন বিস্তৃত হয়ে যাচ্ছে। ব্রিজ থেকে বর্তমানে সংযোগসড়ক ৫-৬ ফুট ওপরে অবস্থান করছে। টিন দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেইলি ব্রিজের পশ্চিম অংশ। এ অবস্থায় নদী পারাপার প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তার পরও থেমে নেই মানুষের মানবিক উদ্যোগ।
স্থানীয় জামায়াত-শিবির ও ছাত্রদলের মিলিত প্রচেষ্টায় শনিবার থেকে নদী পারাপারের সাময়িক ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীতে জমে থাকা কচুরিপানা জমাটবদ্ধ করে তারা পায়ে হাঁটার পথ তৈরি করেন। এরপর নদীর পূর্বপাশে ছোট কাঠের পাটাতন বসিয়ে দেওয়া হয়। শ্যাওলার সংকীর্ণ পথ দিয়ে হেঁটে সারিবদ্ধভাবে মানুষ নদী পার হচ্ছেন। এর ফলে গত শুক্রবার সকাল থেকে কলারোয়া ডাকবাংলোর পূর্বপাশে বেত্রবতীর দুপারে টানানো রশি দিয়ে চলা খেয়া নৌকায় পারাপার আপাতত বন্ধ হয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কলারোয়া পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শরিফুজ্জামান তুহিন শনিবার বলেন, এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানান, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে বেত্রবতীর দুপাড়ে মানুষ চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে শনিবার সকাল থেকে ড্রাম ব্যবহার করে বিকল্প একটি সেতু নির্মাণের তোড়জোড় করতে দেখা গেছে। দুপাশে ড্রাম দিয়ে ভাসমান বিকল্প সেতু স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে কলারোয়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, বেত্রবতীর ক্ষতিগ্রস্ত দুটি কাঠের সাঁকো সংস্কারের জন্য তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এজন্য প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণের কাজ চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক হলে শিগগিরই তারা সাঁকো দুটি সংস্কারের কাজে হাত দেবেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বেত্রবতী নদীর তিন সেতু বা সাঁকো পানির তোড়ে ভেসে যায়। ফলে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
মন্তব্য করুন