সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে শ্রমিক লীগ নেতার পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি-ধমকি, শাসানো ও লাঞ্ছিত করেছেন উপজেলা যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতারা। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ করছিলেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর আইন অমান্য করে যমুনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে সেই শ্রমিক লীগ নেতার ড্রেজার শ্রমিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে উপজেলা প্রশাসন।
সেই বিষয়কে কেন্দ্র করে সেদিন বিকেলে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আরমান হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক আব্দুল কাদের ডেইলি ট্রাইব্যুনাল পত্রিকার চৌহালী প্রতিনিধি আল ইমরান মনু ও কালবেলার চৌহালী প্রতিনিধি ইমরান হোসেন আপনকে উপজেলার জোতপাড়া বাজারের মধ্যে ডেকে নিয়ে গালাগাল ও হুমকি-ধমকি দেন।
এ ছাড়া মাইটিভির চৌহালী-বেলকুচি প্রতিনিধি আব্দুল লতিফকে ফোন করে গালাগাল করেন। তারা বলেন, উপজেলা প্রশাসনকে তোরা তিন সাংবাদিক মিলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযানে পাঠিয়ে জরিমানা করিয়েছিস। তোরাই জরিমানার হাত থেকে ওদের বাঁচাবি, নইলে তোদের তিনজনের খবর আছে।
এ ছাড়া তারা বলেন, তোদের আগেই বলেছি, কোনো গুরুত্বপূর্ণ নিউজ আমাদের অনুমতি ছাড়া করবি না। তোরা যদি জরিমানার হাত থেকে তাকে (রফিকুল ইসলাম) বাঁচাতে না পারিস, তাহলে তোদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মানববন্ধন করাব।
অন্যদিকে, চৌহালী উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল লতিফ মাস্টারের ছেলে স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আল হাদী মাহবুব সাংবাদিক আল ইমরান মনুকে ফোনের মাধ্যমে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
এর পরই তার বড় ভাই হান্নান মোরশেদ রতন তাদের দুই ভাইয়ের নিজস্ব বাহিনীর মাধ্যমে ভূতের মোড় এলাকায় সাংবাদিকদের হেয়প্রতিপন্ন করতে একটি মিছিল বের করেন এবং হান্নান মোরশেদ রতন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে উসকে দিতে বক্তব্যে বলেন, এই তিন সাংবাদিক আমাদের এলাকার উন্নয়ন চান না। তারা উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করবেন, তারা আওয়ামী সরকারের দালাল, তাদের পিঠের চামড়া আপনারা তুলে দেবেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সাব-ঠিকাদারের কাছ থেকে বস্তাপ্রতি ৫ টাকা চাঁদা না পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। আপনারা ওদের উচিত শিক্ষা দেবেন।
তবে সাব-ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকরা চাঁদা কিংবা কোনো টাকা-পয়সা চাননি। নদীর পাড়ঘেঁষে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করেছেন। একই দিন রাত ১২টার সময় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মান্না সিকদার এ ঘটনা কেন্দ্র করে সাংবাদিক ইমরান হোসেন আপনকে ফোনে হুমকি-ধমকি দেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিক আল ইমরান মনু বলেন, উপজেলা প্রশাসনের অভিযান কেন্দ্র করে শ্রমিক লীগ নেতার পক্ষে উপজেলা যুবদল সভাপতি আরমান হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা হাদী, তার ভাই রতন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মান্না সিকদার গত দুদিনে দফায় দফায় আমাকে এবং আমার দুই সহকর্মীকে হুমকি-ধমকি দেন। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সাধারণ জনগণকে উসকে দিচ্ছেন। আমরা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
মন্তব্য করুন