বগুড়ায় গুলি করে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপুসহ ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে ২৯৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১৫০ জনকে। এ মামলায় পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিকেও আসামি করা হয়েছে।
বগুড়া শহরের বাদুড়তলা এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে রানা মিয়া ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে সদর থানায় এ মামলা করেন। বিদায়ী ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- বগুড়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, কাটনারপাড়া জিমন্যাস্টিক ক্লাবের সভাপতি, আওয়ামী লীগ নেতা কবিরাজ তরুণ কুমার চক্রবর্তী, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবাইদুল হাসান ববি, সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, জেলা যুবলীগ সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, দুলাল চন্দ্র মহন্ত, গোলাম মোর্তুজা রহমান রনি, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব সাহা, আবদুল মান্নান আকন্দ, বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি অমৃত লাল সাহা, বগুড়া জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার চক্রবর্তী, যুবলীগ নেতা জাকারিয়া আদিল, পৌর কাউন্সিলর আলহাজ শেখ আনোয়ার হোসেন রানা, আনোয়ারুত তারিক মোহাম্মদ, মুক্তার হোসেন বকুল, নাসিমুল বারী নাসিম প্রমুখ।
বাদী রানা মিয়া এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে তিনি মিছিলের সঙ্গে বগুড়া শহরের ঝাউতলা ২নং রেলগেট এলাকায় পৌঁছেন।
এ সময় মজিবর রহমান মজনু, রাগেবুল আহসান রিপু, ওবায়দুল হাসান ববি, রফি নেওয়াজ খান রবিন ও শুভাশীষ পোদ্দার লিটনের নেতৃত্বে কবিরাজ তরুণ কুমার চক্রবর্তী শটগান এবং ৭-৪৭ আসামিরা ককটেল, পিস্তল, কাটা রাইফেল, শটগানসহ বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
নিষেধ করলে আসামি কবিরাজ তরুণ কুমার চক্রবর্তী হত্যার উদ্দেশ্যে শটগান দিয়ে গুলি ছোড়েন। একটি গুলি বাম চোখ ভেদ করে ভিতরে ঢুকে রক্তাক্ত জখম হয়। এছাড়া মাথা ও মুখমণ্ডলের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। রফি নেওয়াজ খান রবিন এলোপাতাড়ি গুলি করলে পেট ও বুকের বিভিন্ন স্থানে লেগে গুরুতর জখম হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে ৪-৬ থেকে ৪৭নং আসামি হাতে থাকা অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে।
পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে অনেক ছাত্র, জনতা ও পথচারী রক্তাক্ত জখম হন। পরে বাদী রানা মিয়াকে অ্যাম্বুলেন্সে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে ঢাকার লায়ন আই ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অপারেশন করলেও চোখ থেকে গুলি বের করা সম্ভব হয়নি। এখনো বাম চোখের মধ্যে গুলি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ন্যায়বিচারের আশায় সদর থানায় মামলা করেন।
মন্তব্য করুন