কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের মানিককাজি গ্রামে ফুলকুমার নদের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে মাঝে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী চার গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।
জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের মানিককাজি গ্রামে ফুলকুমার নদের ওপর ১৯৯০-৯১ সালে প্রায় ৩৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও আড়াই মিটার প্রস্থের একটি সরু সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির মাঝখানে ভেঙে বড় এক গর্তের সৃষ্টি হয়। সাবধান, ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু যানবাহন চলাচল নিষেধ’ লিখে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তর।
এতদিন এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করলেও যানবাহন ঢুকতে না পারায় কর্মজীবী মানুষ এবং এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী এই সড়কটি ব্যবহার করেন ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের মানিককাজি, পূর্ব ও পশ্চিম ভোটহাট এবং জয়মনিরহাট ইউনিয়নের বাউসমারি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার লোক।
এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন চলাচল করে এই রাস্তা দিয়ে। সেতুটি ভেঙে যে কোনো মুহূর্তে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মানিককাজি ঘাটপাড় বাজারের ব্যবসায়ী ওসমান, ওবায়দুল্লাহ ও মোখলেছ জানান, সেতুটিতে বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় কনজুমার প্রোডাক্টের মালপত্রের কোনো কোম্পানির গাড়ি বাজারে ঢুকতে পারছে না। তাই উপজেলা সদর থেকে ব্যবসায়িক মালপত্র কিনতে হচ্ছে। তাতে দ্বিগুণ পরিবহন খরচ হচ্ছে।
কিন্তু ক্রেতারা বাড়তি দামে পণ্য কিনতে চাচ্ছেন না। ফলে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন একটি সেতু দ্রুত নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার ইছাহাক আলী জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে অনেক আগেই জানিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে কোনো মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান রোজেন কালবেলাকে জানান, সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি।
উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ কালবেলাকে জানান, ইতোমধ্যে সেতুটি নির্মাণের ব্যয় বিবরণী তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগির দরপত্র আহ্বান করে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করতে পারব।
মন্তব্য করুন