প্রায় একশ ছয় একর দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশির স্নিগ্ধতায় শাপলা-পদ্মফুলে ভরে উঠেছে বাফলা বিল। সূর্যের সোনালি আভা পানিতে প্রতিফলিত হয়ে সৌন্দর্য বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। মনোমুগ্ধকর এই বিলটির অবস্থান নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে রণচণ্ডি ইউনিয়নের বাফলা গ্রামে। এ বিলটিতে বর্ষা মৌসুমে ফোটে হরেক রঙের ফুল, যা শরতে ছড়িয়ে যায় বিলজুড়ে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকে দর্শনার্থীদের ভিড়।
ঘুরতে আসা দর্শনার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, দৃষ্টিনন্দন এই বিলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে উপকরণ বৃদ্ধি, আশপাশে ভালোমানের খাবারের হোটেল স্থাপনসহ বিলটিকে আরও উন্নত করা দরকার। কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী শিউলি আক্তার কালবেলাকে বলেন, এই বাফলা বিলে শাপলা-পদ্মফুল ও হরেক রকম অতিথি পাখির গল্প খুব শুনেছি। এজন্য দেখার কৌতূহল মনের মধ্যে কাজ করেছিল। তাই বাস্তবে দেখে মন জুড়িয়ে গেল।
বাফলা গ্রামের রশিদুল ইসলাম বলেন, এ বিলে বর্ষা মৌসুমে মাছ শিকার করে জীবিকানির্বাহ করেন কয়েকশ জেলে। ঐতিহ্যবাহী এ বাফলার বিলে শীত মৌসুমে অতিথি পাখিতে ভরে যায়। আবার গ্রীষ্ম মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে স্থানীয়রা বোরো ধান আবাদ করেন।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব আ. জলিল বলেন, অনেক বড় পুরোনো বিল হওয়ায় প্রভাবশালী কিছু লোকের নজর পড়েছে। খাস থেকে নিজ নামে লিজ নিয়ে পারিবারিক খামার ও স্থাপনা নির্মাণ করার চক্রান্ত চলছে। যদি ব্যক্তি স্থাপনা তৈরি হয়, তাহলে বিলের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ব্যক্তি মালিকানা যেন তৈরি করতে না পারে সেজন্য প্রতিটি মুহূর্তে সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচণ্ডি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান বিমান কালবেলাকে বলেন, অনেক পুরোনো ঐতিহ্যবাহী বাফলার বিল। এখানে সৌন্দর্য যেন অপরূপ মহিমা প্রকাশ করে। স্থানীয়রা অনেক গরিব লোক, এ বিলে মাছ শিকার করে জীবিকানির্বাহ করেন।
শীতের সময় এখানে অতিথি পাখিদের কোলাহলে মুখর হয় চারপাশ। আর এখন শাপলা-পদ্মফুলে বিলটির সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেছে। বিলে স্থানীয়দের নৌকা আছে, কেউ ঘুরতে চাইলে মাঝিরা নৌকায় ঘোরান। প্রতিদিন কমবেশি ছাত্রছাত্রীসহ অনেক মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হক কালবেলাকে বলেন, আমি নতুন এসেছি, বিলটি সম্পর্কে অনেক শুনেছি। বিলটি আরও সমৃদ্ধকরণসহ দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন