পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও সিরাতুন্নবী সমর্থিত হেফাজত ইসলাম সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও হেফাজত সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ শুরু হয়, পরবর্তী সময়ে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়।
এদিকে সোমবার কসবা পৌর এলাকার সুপার মার্কেট চত্বরে হেফাজত সমর্থিতদের সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। অপরদিকে একইদিনে সকাল ১০টার সময় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থিতরা ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকা থেকে কসবা কদমতলী মোড়ে জড়ো হয়ে জশনে জুলুশের (র্যালি) প্রস্তুতি নেয়। এক পর্যায়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও হেফাজত সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আড়াইবাড়ী মাদ্রাসা ও মাদ্রাসা সংলগ্ন কদমতলী মোড়ে কোরআনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে আড়াইবাড়ির গ্রামবাসীও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় কদমতলী মোড় থেকে টি. আলী বাড়ির মোড় পর্যন্ত।
এ বিষয়ে কসবা উপজেলার নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম প্রচার সম্পাদক মাওলানা ইয়াকুব উসমানী জানান, সকাল ১০টার দিকে পাশের টি. আলী বাড়ির মোড় থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী পুরকুইল দরবার শরিফের পীর ছদর উদ্দিন সাহেবের সমর্থিতরা এসে তাদের উপর হামলা করে এবং কোরআনের ভাস্কর্য ও আড়াইবাড়ি মাদ্রাসায় আক্রমণ করে। পরে তাদের সঙ্গে আমাদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
এ বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থিত পুরকুইল দরবার শরিফের পীর সাহেব মাওলানা ছদর উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারিনি। তার আগেই হেফাজত সমর্থিত লোকজন নিজেরাই কোরআনের ভাস্কর্য ও আড়াইবাড়ি মাদ্রাসায় আক্রমণ করে আমাদের দোষারোপ করে গ্রামবাসীকে ক্ষেপিয়ে দিয়েছে আমাদের জশনে জুলুশ বানচাল করার জন্য। আমরা মনে করছি, আড়াইবাড়ি দরবার শরিফের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব সৃষ্টির জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমাদের বহু লোকজন আহত হয়েছে।
আড়াইবাড়ি দরবার শরিফের পীর সাহেব মাওলানা গোলাম খাবির সাঈদী বলেন, হেফাজত নেতাদের সঙ্গে জশনে জুলুশ নিয়ে সুন্নি সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় আড়াইবাড়ি দরবার শরিফ ও আড়াইবাড়ি কামিল মাদ্রাসার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে জশনে জুলুশকারীরা আমাদের মাদ্রাসা ও কদমতলী মোড়ে কোরআনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে বলে তিনি দাবি করেন।
মন্তব্য করুন