বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাঘোপাড়ার শহীদ দানেশ উদ্দিন কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র শাওন ইসলামকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯৯ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়া সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন শাওন ইসলাম নিজেই। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩০০-৪০০ জনকে। মামলার বাদী শাওন শিবগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীকোলা কাজীপাড়া এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে ও সদর উপজেলার বাঘোপাড়া শহীদ দানেশ উদ্দিন কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র শাওন ইসলাম। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ।
মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান নিকেতা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, একেএম আসাদুর রহমান ও সাগর কুমার রায়, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাছুদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদত আলম ঝুনু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি, বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান।
এ ছাড়া বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান আকন্দ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাশরাফী হিরো, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা, বগুড়া বাস মিনিবাস পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা আবদুল মতিন সরকার, কাউন্সিলর আলহাজ শেখ, আরিফুর রহমান আরিফ, সাবেক কাউন্সিলর ইব্রাহীম হোসেন, যুবলীগ নেতা জাকারিয়া আদিল, তুফান সরকার, ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ আহম্মেদ, তৌহিদ, স্বপন সরকার, সোহাগ সরকার, মশিউর রহমান মন্টি, পিয়াল, নূর আলম নয়ন ও বেনজির।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বগুড়ার বড়গোলা ঝাউতলা এলাকায় মিছিলের ভেতরে গেলে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে আসামিরা পেট্রল বোমা, ককটেল, পিস্তল, কাটা রাইফেল নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। মামলার বাদীসহ জনতারা নিষেধ করলে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বাদীকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে গুলি বাদীর পায়ে লাগে। পরে শট গান দিয়েও এলোপাথাড়ি গুলি করে তবে বাদী সরে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আসামিরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা বাদীকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে গত ১২ আগস্ট উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে বাদী তার বাবার মাধ্যমে সদর থানায় মামলার এজাহার পাঠান।
এর আগে বগুড়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ৬টি মামলা করা হয়। ওইসব মামলার মধ্যে ৫টি হত্যা এবং অপর একটি হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন