জয়পুরহাটে বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য নিম্নমানের ইট, বালু ও খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ইটের দেওয়াল ও ইট ভেঙে ফেলেছে।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণ করে ভালো মানের ইট, বালু ও খোয়া দিয়ে নতুন করে ভবন নির্মাণের কথা জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচবিবি উপজেলার রামতনু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। মাঠের পাশে খামাল দিয়ে রাখা হয়েছে নিম্নমানের ইট। আর সেই ইট দিয়ে ভবনের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের ইট দিয়ে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজে এলাকাবাসী বাধা দিলেও তার তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের ইট, বালু ও খোয়া দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ করছে। এতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে এসব নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণাধীন বিদ্যালয়ের দেওয়াল হাত ও পা দিয়ে গুঁড়িয়ে ভেঙে ফেলে দেয়। এ সময় স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়টির একাডেমিক ভবনের কাজ শুরু থেকেই নিম্নমানের ইট, বালু ও খোয়া দিয়ে করেছে। আমরা বাধা দিলেও প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কোনো গুরুত্ব দেয়নি। তারা অনিয়ম করে কাজ চালিয়ে আসছিল এতদিন। এ কারণে আমরা কোনো প্রতিকার না পেয়ে এলাকাবাসী মিলে বিদ্যালয় ভবনে নিম্নমানের ইট দিয়ে তৈরি দেওয়াল ভেঙে দিয়েছি এবং এসব ইট, বালু অপসারণ করে ভালোভাবে কাজ করার দাবি জানাচ্ছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার মো. সবুর হোসেন বলেন, এখানে নিম্নমানের ইট দিয়ে স্কুলের ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। এলাকাবাসী তাতে বাধা দিয়েছে। আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। নিম্নমানের ইট অপসারণ করে তারপর নতুন ইট এনে আমরা কাজ শুরু করব। তাছাড়া আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার। আমার দায়িত্ব ঠিকাদারের সব মালামাল দেখাশোনা করা।
রামতনু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, আমার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। স্কুল বন্ধ ছিল। সে সুযোগে ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের ইট এনে কাজ শুরু করেছে।
পাঁচবিবি প্রকৌশলী অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি রিসিভ হয়নি।
পাঁচবিবি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আজিজুল হক বলেন, রামতনু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ শুনে তাৎক্ষণিক ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেছি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে স্কুলের কোনো কাজ হবে না। ভালো মানের সামগ্রী ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন