রাজশাহীতে ৫ আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দুই শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামি জহিরুল ইসলাম রুবেলকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক ফয়সল তারেক শিক্ষার্থী আলী রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থী আলী রায়হান হত্যা মামলায় রুবেলকে পুলিশের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে আদালতে তোলা হয়। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বোয়ালিয়া থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, শনিবার গভীর রাতে রুবেলকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা থেকে রাজশাহীতে আনে র্যাব। রাতে র্যাবের হেফাজতেই রাখা হয়। সেখান থেকে সকালে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ গ্রহণ করে। এরপর ছাত্রশিবির নেতা আলী রায়হান হত্যা মামলায় রুবেলকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা। ওসি আরও জানান, তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী আলী রায়হান ও সাকিব আনজুম হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া আরও দুটি মামলার আসামি সে। তাকে দুটি হত্যাসহ চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী রুবেল। রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলন দমনে দুই হাতে জোড়া পিস্তল নিয়ে মুহুর্মুহু গুলি বর্ষণ করে।
জহিরুল হক রুবেলের (৪১) বাড়ি নগরীর চণ্ডিপুর এলাকায়। তার বাবার নাম আব্দুর রাজ্জাক। সে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামানের লিটনের ডানহাত হিসেবে পরিচিত। রাজশাহী নগরীতে ছাত্র আন্দোলন দমনে শীর্ষ সন্ত্রাসী রুবেলকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন লিটন। ওই দিন রুবেলের নেত্বত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অন্তত একডজন নেতাকর্মী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়াও রুবেল আরও একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনেও মামলা রয়েছে।
গত ৫ আগস্টের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রুবেল মাথায় হেলমেট পরে দুটি পিস্তল দুই হাতে নিয়ে সমান তালে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করছেন। এ সময় সঙ্গে আরও ছিলেন, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি বোরহান উদ্দিন পাভেল, মহানগরীর ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রনি, মহানগর যুবলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক রাজিব মতিন ও মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রোজেলসহ অনেকেই। ওই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম ও রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী আলী রায়হান নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
মন্তব্য করুন