গোপালগঞ্জে বিএনপির গাড়িবহরে আওয়ামী লীগের অতর্কিত হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতা নিহতের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা সদরের ঘোনাপাড়া এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে।
আটক দুজন হলেন, ঘোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা ডা. আলিমুজ্জামান ও একই এলাকার সিজার শেখ।
নিহতরা হলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা শওকত আলী দিদার ও ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা লিটন। নিহত শওকত আলী দিদার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আম্পায়ার ছিলেন। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. আনিচুর রহমান দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী তার নিজ বাড়ি টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছিলেন। তার আগমন উপলক্ষে জেলা শহরের ঘোনাপাড়া এলাকায় পথসভার আয়োজন করেন স্থানীয় বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার ৩টার দিকে জেলা শহরের বেদগ্রাম এলাকায় পথসভা শেষে ৪টার দিকে ঘোনাপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় ঘোনাপাড়ায় পৌঁছলে তাদের গাড়িবহরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান।
হামলার ছবি তুলতে গেলে সময় টিভির চিত্র সাংবাদিক এইচ এম মানিককে মারধর ও ক্যামেরা ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে শওকত আলী দিদারকে বেধড়ক পিটিয়ে সড়কের পাশে ফেলে রাখে হামলাকারীরা। তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে লিটন মারা যান।
হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সবুজসহ আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন।
ওসি মো. আনিচুর রহমান বলেন, বেদগ্রামের পথসভা শেষে টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার সময় ঘোনাপাড়ায় এলাকায় পৌঁছালে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জিলানীর গাড়িবহরে হামলা করা হয়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, হামলায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরিস্থিতি বর্তমানে আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। নিহতের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলা ও নিহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মন্তব্য করুন